প্রতিবাদ করায় প্রতিবন্ধী যুবকের শিরচ্ছেদ করবে সৌদি

প্রতিবাদে অংশ নেওয়ায় এক প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে সৌদি আরব। সম্প্রতি মুনির আল আদম নামের ২৩ বছর বয়সী ওই যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

সৌদি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির আদালত এর মধ্যেই মুনির আদমের মৃত্যুদণ্ডাদেশের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বাকি আছে কেবল ওই মৃত্যুদণ্ডাদেশে সৌদি বাদশার স্বাক্ষর। এরপর দেশটির প্রচলিত বিধান অনুযায়ী শিরশ্ছেদ করে ওই যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।

এদিকে, গত সপ্তাহে মুনির আদমের মৃত্যুদণ্ডের আপিলের আদেশ খারিজ হওয়ার পর সৌদি ও এর বাইরের মানবাধিকারকর্মীরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।

সৌদি আরবের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও রাজপরিবারের কাছে এই মৃত্যুদণ্ডাদেশের প্রতিবাদ জানিয়েছে। সৌদির শরিয়াহ আইনুযায়ী শারীরিকভাবে অক্ষম ও প্রতিবন্ধীদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ার বিধান নেই। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মুনির আদমের শারীরিক অক্ষমতার সপক্ষে চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র হাজির করেছে।

প্রতিবন্ধী মুনির আদমকে ২০১২ সালে সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলের শিয়া অধ্যুষিত প্রদেশ থেকে আটক করা হয়েছিল। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর।

আদম ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় তাঁর দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন। এরপর ২৩ বছর বয়সী অন্ধ মুনির পুলিশের নির্মম নির্যাতনে এরই মধ্যে তাঁর একটি কানের শ্রবণশক্তিও হারিয়েছেন।

মুনিরের পরিবারের সদস্যরা এর মধ্যেই আদালতের রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অভিযোগ করেছে, বিচার চলাকালীনও মুনিরের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে।

সৌদি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, আদমকে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার সময়ে হিংস্রতা ও মোবাইলে আপত্তিকর বার্তা পাঠানোর দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। আদম নিজেও বিশেষ অপরাধ আদালতে এর স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কিন্তু মানবাধিকারকর্মীদের দাবি, এটা সৌদি পুলিশের চিরাচরিত ‘বাধ্যতামূলক অথবা জোর করে নেওয়া বিবৃতি।’

সৌদি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বক্তব্য, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের সময় মানবাধিকারকর্মীরা ‘নির্মম ও প্রতিহিংসামূলক’ মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ করতে অনুরোধ ও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ট্রাম্পের কাছে আহ্বান জানায়। কিন্তু ট্রাম্প মানবাধিকারকর্মীদের ওই আহ্বানে সাড়া দেননি।

চলতি বছরের শুরুতে সৌদি আরব একদিনেই ৪৭ শিয়ার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করে। মে মাসে দেশটিতে এ বছরের মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৮ জনে।