প্রতিযোগীদের ভুল-ভ্রান্তি, যা বললেন উপস্থাপক নিরব

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮’ নির্বাচিত হয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। প্রথম রানারআপ নিশাত নাওয়ার সালওয়া এবং দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন নাজিবা বুশরা। গতকাল রবিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির রাজদর্শন হলে বিচারকমণ্ডলীর ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তাঁরা। ৭ ডিসেম্বর চীনে অনুষ্ঠেয় মূল পর্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী।

এই পুরো অনুষ্ঠানের কিছু কিছু ভুল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এই ভুল নিয়ে ফেসবুক হ্যান্ডেলে লিখেছেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক আরজে নিরব।

নিরব বলেন, ‘মিস ওয়ার্ল্ড-এর পুরো সেশন আমি উপস্থাপনা করেছি। একেবারে ভিতর থেকে দেখেছি সব চেষ্টা। কিছু প্রশ্ন শুরু হয়েছে তার উত্তর হয়তো আমি ছাড়া আর কেউ দিতে পারবে না স্পষ্ট ভাবে।’

নিরব বলেন, ‘প্রথমেই রিয়েলিটি শো এর একটা গোপন কথা বলে রাখছি- প্রায় প্রতিটি প্রতিযোগিতায়ই বিচারকরা কি প্রশ্ন করবেন? আর তার উত্তর কি হবে? তা আগের সপ্তাহেই ইভেন্ট থেকে লিখে প্রিন্ট করে প্রতিযোগীদের হাতে তুলে দেয়া হয় মুখস্থ করার জন্য। বিচারকরা সেটা নিখুত অভিনয়ের মাধ্যমে রিয়েল করে তোলেন ক্যামেরার সামনে , যেটা এই শো তে করা হয় নি।’

এরপর তিনি তার বক্তব্যকে পয়েন্ট নোট করে উপস্থাপন করেন।

‘১. আগেই ফল প্রকাশে ঐশীই এবারের বিজয়ী এর চাইতে সহজ কোনও অনুমান হতে পারে না। যারা এই ১০ জনকে এক লাইনে দেখেছেন তারা বুঝবেন ঐশি এই মুকুটটার সবচেয়ে বেশি যোগ্য, সুন্দর, বুদ্ধিদীপ্ত , পরিশ্রমী। বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধি যাবেন মাত্র ১ জন। ১০ জন না, ৩০ হাজার না। বিচারকরা সেই একজন যোগ্য মানুষটা নির্বচন করেছেন। হাজারটা গোবরের মাঝ থেকে একটা পদ্মফুল খুজেঁ পেতে তাদের আসলেই অনেক হাস্যকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, যার সামান্য নমুনা আপনি দেখেছেন। কিন্তু যে ১ জন খোঁজা এই শো এর উদ্দেশ্য ছিল, তা সঠিক ভাবেই পালন করেছেন আমাদের বিচারকেরা, তা নিয়ে কারো কোন সন্দেহ নাই।

২. H2O issue – ভাইরে কোটি কোটি মানুষ লাইভ দেখছে , ২ লাখ পাওয়ার লাইটের সামনে , ১৩ টা ক্যামেরা চলছে, আর স্টেজ ভর্তি মানুষ। একবার, একেবারে নতুন, অভিজ্ঞতাহীন একটা মানুষ হিসেবে নিজেকে ওই জায়গায় দাঁড় করিয়ে চিন্তা করেন! দেখবেন ভু্ল উত্তর দেয়া খুব স্বাভাবিক। অনন্যা, যে মেয়েটা ভুল উত্তর দিয়েছে – ওর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাইন্ড সবার চাইতে ভাল। বাবা অনেক বড় সরকারি কর্মকর্তা, নিজেও পড়ছে ভাল জায়গায়। আর সব গুলো মেয়ের থেকে সব রাউন্ডে ও সব চেয়ে ভাল উত্তর দিয়েছে, পোশাকও ভাল পরেছে। পিছনের এপিসোড দেখলে বুঝতে পারবেন, ইউটিউবে লিংক আছে।

৩. wish issue – একদম খাস সত্যি কথা হলো- যারা সুন্দর তাদের বুদ্ধি কমই হয়। তারপরও অনেক সুন্দর এবং বুদ্ধিমতি মানুষ আছেন। কিন্তু অধিকাংশই পরিবারের চাপে বা নিজের অনিহায় মিডিয়াতে আসতে চান না। যে মেয়েটা এই উত্তর টা দিয়েছে সে প্রতন্ত গ্রামের একজন প্রতিযোগী। থানা শহরে যারা টিনের চালার স্কুলে পড়েছেন তারা জানেন- ইতিহাসের শিক্ষক কেমন করে ইংলিশের মাস্টার হয়। তারপরও মেয়েটার বোকামি অসহনীয়। সেরা ১০ করতে যেয়ে ওকে রাখা হয় , কারণ ওর চাইতে ভাল উচ্চতার মানুষ এবার আসে নাই খুব একটা।

৪. its a family show ?- যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি – এটি একটি corporate শো। এর জন্য কোটি টাকা দিয়ে লাইসেন্স কিনতে হয়। মাগনা দেয় না কোনও কিছু , বা সরকার এর জন্য ভুর্তকি দেয়না। নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে একজন এই শো টা করছেন। একেবারেই পরিবারের টাকায়। সেখানে একটু আধটু ভালোবাসার আদিখ্যেতা চলে।

শেষে আমাদের দেখার ছিল যিনি প্রথম হচ্ছেন তিনি কেমন? যিনি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাবেন ! সেই হিসেবে সবচাইতে যোগ্য মেয়েটা যাচ্ছে দেশের পতাকা নিয়ে । তার জন্য শুভ কামনা।’

৭ ডিসেম্বর চীনে অনুষ্ঠেয় মূল পর্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী।