প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ: প্রত্যাহার হতে পারে ইউএনও’র বিরুদ্ধে করা মামলা

বরিশালের আগৈলঝাড়ার সাবেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে বরগুনা সদর উপজেলায় কর্মরত) তারিক সালমানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে করা মামলা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির কয়েকজন সদস্য। এই সমিতির সভাপতি ও বরিশাল আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজুর করা মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসন্তোষ প্রকাশের পর এই চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।

গত বুধবার সকালে তারিক সালমানের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বরিশালের একটি আদালতের বিচারক। পরে অবশ্য তাকে জামিন দেয়া হয়। এরপর পুরো ঘটনাটি সামনে চলে আসে এবং একজন শিশুর আঁকা ছবি উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণপত্রে ব্যবহারের ঘটনায় এই মামলা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম জানান, এই মামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আজ যত কর্মকর্র্তা ছিলেন, এটি দেখে আমরা সকলেই বিস্মিত হয়েছি। যে ব্যক্তি এই মামলা করেছেন, আমরা মনে করি তিনি অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ করেছেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল আইনজীবী সমিতির একাধিক সদস্য বলেন, মামলার বিষয়টি প্রচার হওয়ায় এর বাদী সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজুর বেশ বেকায়দায় পড়েছেন। আবার এই মামলা নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিন্দা প্রকাশের পর মামলাটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন বাদী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু বলেন, ‘ এ বিষয়টি নিয়ে আজ বিকালে আমাদের আইনজীবী সমিতিতে মিটিং রয়েছে। মিটিং এর পর কোন একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হবে। যেটা পরে সাংবাদিকদের জানান হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘অনতিবিলম্বে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি।’

যে অভিযোগে মামলা
গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেখানে এক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় আগৈলঝাড়ার এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

এই প্রতিযোগিতার প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দুটি ছবির জন্য তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। আর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণপত্রে ছবি দুটি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে প্রথম স্থান পাওয়া জ্যোতি ম-লের ছবিটি আমন্ত্রণপত্রের কভারে এবং অদ্রিজা করের দ্বিতীয় ছবিটি ব্যবহার করা হয় আমন্ত্রণপত্রের পেছনের পাতায়।

পেছনের পাতায় ছাপা হওয়া ছবিটির জন্যই ইউএনও গাজী তারিক সালমানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতের অভিযোগে মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু।