প্রিন্সিপাল হাবিবের জানাযায় লাখো মুসল্লি

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে তার প্রতিষ্ঠিত সিলেটের জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে বেলা সাড়ে ৩টায় নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই আলেমের নামাযে জানাযা হয়। লাখো মুসল্লি তার জানাযায় অংশ নেন।

মাওলানা হাবিবুর রহমানকে শেষবারের মতো দেখতে ও জনাযায় অংশ নিতে এত সংখ্যক মানুষ আসেন যে, সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

জানাযায় ইমামতি করেন মরহুমের দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন হারুন। এতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা আশফাক আহমদ, বিএনপি নেতা মাওলানা রশিদ আহমদ প্রমুখ অংশ নেন।

জানাযায় এসে মাওলানা হাবিবুর রহমানের অনুসারি ও ভক্তরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাজনীতিক থেকে আলেম-ওলামা ছাড়াও শিক্ষার্থীরা তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্না চেপে রাখতে পারেননি।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাওলানা হাবিবুর রহমান ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস, হাইপ্রেসারসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ৭ অক্টোবর মাওলানা হাবিবুর রহমান চিকিৎসার জন্য ভারত যান। সেখান থেকে দু’দিন আগে দেশে ফেরেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি চার ছেলে ও তিন মেয়ে সন্তানের জনক। তার বড় ছেলে মাওলানা মুসা বিন হাবিব জামেয়া মাদানিয়া কাজির বাজার মাদ্রাসার ভাইস-প্রিন্সিপাল।

বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান।

১৯৭৪ সালে দেশের শীর্ষ আলেমদের তত্ত্বাবধানে সিলেটের কাজির বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহ্যবাহী জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার মাদ্রাসা। দারুল উলুম দেওবন্দের নীতিতে পরিচালিত এই মাদ্রাসা শুরু থেকেই সিলেবাসে বাংলা, ইংরেজিসহ জাগতিক বিষয় যুক্ত করে নতুন ধারার সূচনা করে।

কওমি মাদ্রাসার প্রধানের পরিচয় মুহতামিম হলেও তিনি পরিচিত ছিলেন প্রিন্সিপাল হিসেবে। তিনি দেশের প্রাচীনতম আলিয়া গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ি মাদ্রাসায় ফাজিল ও সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন।

অভিভক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের রাজনীতি থেকে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ খেলাফত মসজিলের আমির নির্বাচিত হন মাওলানা হাবিবুর রহমান। ২০১২ সালে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশে খেলাফত মজলিসের আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক মৃত্যুবরণ করার পর দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তে দলের আমির নিযুক্ত হন মাওলানা হাবিবুর রহমান।