ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে এসে বহিস্কৃত শিক্ষার্থীর আত্মহনন চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক (সাভার ) : অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি এর পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নের (অবজেকটিভ) উত্তর হাতে লিখে পরীক্ষা দিতে এসে সাভারে এক শিক্ষার্থী বহিস্কারের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় পরীক্ষা কেন্দ্রের ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেছে ঐ শিক্ষার্থী। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বহিস্কৃত ঐ শিক্ষার্থী তার বন্ধুর মাধ্যমে পরীক্ষার আগের রাতেই প্রশ্ন পেয়েছিল বলে তার নিকট স্বীকার করেছে।

সোমবার সকালে সাভারের ঐতিহ্যবাহী অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে ঐ পরিক্ষার্থীর নিকট নকল ধরা পড়ার পরই প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস হওয়ার বিষয়টি নজরে আসে।

জান্নাতুল ফেরদৌসি নামে ঐ শিক্ষার্থী সাভার ব্যাংক কলোনী এলাকার ইয়াকুব আলীর মেয়ে। সাভার গার্লস স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়।

সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন পিটার গমেজ জানান, সকাল ১১টার দিকে তাদের কেন্দ্রে এসএসি পরীক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আজ পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা দিচ্ছিল। এসময় ঐ শিক্ষার্থীর নকল করার বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ম্যাজিস্ট্রেট) মেজবাহ উদ্দিনের নজরে আসে। পরে তিনি শিক্ষার্থীর বাম হাতে পদার্থ বিজ্ঞানের ২৫টি অবজেকটিভ প্রশ্নের উত্তর লেখা অবস্থায় দেখতে পান। হুবহু হাতে লেখা উত্তরের সাথে প্রশ্নের সব গুলো উত্তর মিলে গেলে তার বিষয়টি সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঐ শিক্ষার্থী তার কুষ্টিয়া জেলার দেশের বাড়ির বন্ধুর নিকট থেকে পরীক্ষার আগের রাতেই প্রশ্ন পেয়েছে বলে স্বীকার করে। এঘটনায় শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসকে বহিস্কার করা হয়। পরে সে বাইরে এসে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দা থেকে হঠাৎ লাফিয়ে পড়ে। এসময় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমজাদুল হক বলেন, ঐ শিক্ষার্থীর বাম পায়ের হাঁড় ভেঙ্গে গেছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকা উপজেলা পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জানান, হাতেনাতে ঐ পরীক্ষার্থীর নকল করার বিষয়টি ধরা পড়েছে। কিন্তু তার হাতে লিখে নিয়ে আসা ২৫টি অবজেকটিভের উত্তর ও প্রশ্নের উত্তর হুবহ মিল হওয়ায় তিনি ঐ শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে সে পরীক্ষার আগের রাতে তার বন্ধুর নিকট থেকে প্রশ্ন পাওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে।