বরাদ্দ স্বল্পতা : ভাতা পান না এই তিন বিধবা

‘সামান্য থাহনের (থাকার) ঘর ও ছয় মাস বয়সের একটি মাইয়া রাইক্কা জামাই (স্বামী) আমার মারা গেছে। বাপ মরা মাইয়াডার মুখের দিক চাইয়া মাইনসের বাড়িতে কাম করতে করতে রইয়া গেলাম স্বামীর ভিটায়।

স্বামী মরছে ৩০ বছর অইছে। ত্রিশ বছর আগে যে আমার কপাল ভাঙ্গছে অহনও জোড়া লাগে নাই। অহনও মানইসের বাড়িতে কাম করি। তবে অসুখ-বিসুখে ভুগি অনেক। সামান্য ওষুধ খাওনের টাকাও থাকে না মাঝেমধ্যে। হুনছি সরকার ভাতা দেয়, আমারে দেয়না কেন? ভাতা পাইলেতো এই টাকাটা দিয়ে ওষুধ খাইতাম!’ এভাবেই প্রতিবেদকের কাছে কথাগুলে দুঃখ করে বলছিলেন কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের হিরারকান্দা গ্রামের মৃত ইমতাজ আলীর স্ত্রী আফিয়া খাতুন (৬০)।

অপরদিকে, একই গ্রামের মৃত ফূল মিয়ার স্ত্রী নজিবা খাতুন (৫৫) ও মৃত সামেদ মিয়া স্ত্রী সামছুন্নাহার (৪০) আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরাও কোনো ভাতা পাই না। মেম্বারের কাছে গেছি অনেকবার কাজ হয়নি। ‘

স্থানীয় মেম্বার ইদ্রিস মিয়া জানান, ওই তিন নারী বিধবা ভাতা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বরাদ্দ স্বল্পতার কারণে আমরা দিতে পারি না।

জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক আওতায় বিভিন্ন ভাতার হার বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সেখানে বিধবা স্বামী নিগৃহীতা, দুঃস্থ মহিলা ভাতার হার ১ শ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ শ টাকা এবং ভাতাভোগীদের সংখ্যা বাড়িয়ে সাড়ে ১১ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগী দুঃস্থ মহিলার সংখ্যা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ সেই বাজেটের আওতায় আসতে পারেনি ওই গ্রামের তিন বিধবা।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কবির আহমেদ বলেন, ওই এলাকার মেম্বার আমাকে বিষয়টি জানায়নি লিখিতভাবে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।