বশেমুরবিপ্রবিতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে মন্তব্যের জেরে শিক্ষকদের মধ্যে কোন্দল

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, (বশেমুরবিপ্রবি) গোপালগঞ্জ এ এমনটিই ঘটেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। বিষয়টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হুশিয়ারি পর্যন্ত গড়ায়। আইনি নোটিশ সম্পন্ন হয়েছে। বশেমুরবিপ্রবি’তে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকের উকিল নোটিশ ও ডিজিটাল আইনে মামলা’র হুশিয়ারি’র সারসংক্ষেপ –

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব সাদ্দাম হোসেন এর একটি পোস্টে অন্যান্য অনেক শিক্ষক এর মতোই কমেন্ট করেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী মোহাম্মদ মাহবুব। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি ক্লোজ গ্রুপে শিক্ষকগণ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আলোচনা ও মন্তব্য করেন বলেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক প্রতিনিধি এই গ্রুপের পরিচালনা করেন। কোডিড মহামারী তে ক্লাস কার্যক্রম যখন বন্ধ তখন তথ্য আদান প্রদানের লক্ষ্যে গ্রুপটি সক্রিয় ভুমিকা পালন করে আসছে বলে সকল শিক্ষক মনে করেন। এইরকম একটি আলোচনার অংশ হিসেবে অনলাইন ক্লাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বশেমুরবিপ্রবি’র পিছিয়ে যাওয়া ও আপগ্রেডেশন বোর্ডে শর্তারোপ সহ বিভিন্ন অনিয়ম বিষয়ে লেখা হয়। এরই অংশ হিসেবে ডীনস কমিটির মেম্বারদের অনলাইন প্রশিক্ষণ নিয়ে মন্তব্য করেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক জনাব গাজি মাহাবুব। তিনি পরোক্ষভাবে ডীনদের কাজের সীমাবদ্ধতা ও জবাবদিহিতা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন যা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক।

পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন ও সাবেক রুটিন উপাচার্য ড. মো. শাহজাহান অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব গাজী মোহাম্মদ মাহবুব এর বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠান এবং সন্তোষজনক উত্তর না পেলে ডিজিটাল আইনে মামলার হুশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাধারণ শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের প্রতিনিধি সদস্যগণ মনে করেন যে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি আশানুরূপ না। কিন্তু এই মহামারীর সময়ে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং কাউন্সেলিং এর প্রয়োজন। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি অনেক পিছিয়ে এবং অগ্রায়নের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। এছাড়া অনেক বিষয় আছে, যেখানে জবাবদিহিতার প্রয়োজন।

এটি একটি মুক্ত আলোচনা যেখানে সকল শিক্ষক স্বাভাবিক ভাবেই অংশগ্রহণ করেছেন। এই জন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকের উকিল নোটিশ এবং মামলার হুমকি তে সকলে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এতে করে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি খারাপ করবে বলে মন্তব্য করেন অনেক শিক্ষক। সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন ও শিক্ষা কার্যক্রম আধুনিকায়ন এর জন্য সকলের মতামত কে থামিয়ে দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে এই উকিল নোটিশ প্রদানে নিন্দা জ্ঞাপন করেন। অর্থনীতি বিভাগ সহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও বিষয়টিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে। বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবক তথা উপাচার্য মহোদয় এর প্রতি আস্থা রেখে তারা প্রতিবাদী ভুমিকায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেনি তবে ভার্চুয়াল ভাবে অবস্থান নিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন।
এদিকে এ বিষয়ে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে শিক্ষকদের বৈঠকের কথা রয়েছে বলে জানা যায়।