বশেমুরবিপ্রবি’তে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।

সোমবার (২১ ফেব্রয়ারি) সকাল ১০.৩০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে ৫০১নং কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ “বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বাংলা চর্চা” উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের অধ্যাপক ও ভাষা বিজ্ঞানী গবেষক ড. হাকিম আরিফ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মানবিকী অনুষদের ডিন মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া, আইন অনুষদের ডিন ও প্রক্টর ড. মোঃ রাজিউর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ কামরুজ্জামান, বাংলা বিভাগের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা মুক্তা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব হলের প্রভোস্ট বাঁধন মনি, অফিসার্স এসোসিয়েশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সরাফত খান প্রমুখ ও কবিতা আবৃতি করেন শিশু মিষ্টি সৃজিতা। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. গোলাম ফেরদৌস।

আলোচনা সভার সভাপতি ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা ভাষাকে শক্তিশালী করার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলা একটি সমৃদ্ধ ভাষা হলেও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিজ্ঞান শিক্ষায় বাংলা এখনও অবহেলিত রয়েছে। উচ্চ শিক্ষায় বাংলার ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রবন্ধ উপস্থাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ভাষার চর্চা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, মাতৃভাষায় যদি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করা যেত, তাহলে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটতো এবং নতুন কিছু উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করতে পারতো। উন্নত বিশ্বের শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তাদের মাতৃভাষাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বাংলা ভাষার যথাযথ ব্যবহার না হওয়ার জন্য আমরা নিজেরাই অনেকটা দায়ী। বাংলা ভাষার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ করতে আমাদের চেষ্ট চালিয়ে যেতে হবে।

বাংলা বিভাগের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, বাংলা ভাষার উপর সাম্রাজ্যবাদ এসেছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যথাযথ চর্চা করে আমরা তা রুখে দিতে পারি।

এর আগে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ০১ মিনিটে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় আরো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ, সকল হল, বিভিন্ন বিভাগ এবং সংগঠনসমূহ।

বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিকালে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্ত-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।