অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে চিকিৎসা

বাগেরহাটের শরণখোলার ৫০ শয্যার হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অভাব

বাগেরহাটের শরণখোলায় ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অভাবে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পরিণত হয়েছে বলে রোগীরা অভিযোগ করেছেন। গত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্য একজন পবিরচ্ছন্নতা কর্মী শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ থাকলেও অজ্ঞাত কারনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে।

একটি সুত্র জানায় হাসপাতালটিতে ৪ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাহিদা থাকলেও মাত্র একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে চলছে পুরো হাসপাতাল। আর তিনি অবসরে যাওয়ার সময় হয়েছে তাই বয়সের ভারে সব কাজ করতেও পারেন না। আর এ কারনে ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগী ও চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা বাথরুম ও লেট্রিনে গিয়ে বেহাল অবস্থার মধ্যে পরেন। রোগীদের অভিযোগ লেট্রিনের দূর্গন্ধে অনেক সময় ওয়ার্ডে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়।

শরণখোলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১১ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭ জন। যার জন্য উপজেলার ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের সেবা দিতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের। মেডিকেল টেকনলজিষ্ট ল্যাবরেটরী ১ জন, রেডিওগ্রাফী ১ জন, কার্ডিও গ্রাফার ১ জন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ১ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২ জন কর্মরত থাকলেও স্বাস্থ্য সহকারীর ১৬ টি পদ শূণ্য রয়েছে। আর এজন্য রোগীরা এক্সরে, ইসিজি ও অন্যান্য পরীক্ষা করানোর সুযোগ সুবিধা থেকে বি ত হচ্ছে।

তাই বিভিন্ন সময় উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা রোগীরা জানায় অনেক সময় অপেক্ষা করে ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়া যায়। তাছাড়া যে ধরনের টেষ্ট রোগীর জন্য দেয়া হয় তার বেশির ভাগ হাসপাতালের বাহিরে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে করাতে হয়। আর এতে বাড়তি অর্থ দিতে গিয়ে রোগীর ঔষধ কেনার পয়সা আর থাকে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সমাজ সেবক বলেন, শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক ডাক্তার কাগজে কলমে থাকলেও উপর মহলের সহযোগীতায় তাদের সুবিধা মতো স্থানে চলে যান।

কিন্তু তারা বেতন ভাতা ঠিকই এখান থেকে উত্তোলন করলেও সেব দেন বাগেরহাট, খুলনা বা ঢাকায়। এদের মধ্যে রয়েছেন ডাঃ নাদিরা নওরিন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ডাঃ প্রসেনজিত কুমার বাগেরহাট সদর, ডাঃ তাহসিনা হক প্রমি খুলনা সদর হাসপাতাল ও ডাঃ সবুজ মিয়া(হোমিওপ্যাথিক) মঠবাড়িয়া পিরোজপুর।

এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ প্রিয় গোপাল বিশ্বাস বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় বাহির থেকে ২/১ জনকে দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে আপাতত পরিচ্ছন্নতার কাজ করে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের জন্য উপর মহলে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ব্যাপারে অনেকবার উপর মহলে বলা হলেও তারা নিয়োগ না দেওয়ায় অনেকটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ জালাল আহম্মেদ বলেন, সরকারি ভাবে পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ না থাকায় কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে ডাক্তার সমস্যা সমাধানে উর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীর পরিচালক ডাঃ মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ না থাকায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যে সকল ডাঃ ঢাকা বা খুলনাতে আছেন তাদেরকে অধিদপ্তর থেকে বদলি করা হয় সেখানে আমার করণীয় কিছু থাকে না। তবে বাগেরহাটে যিনি আছেন তার ব্যাপারে লিখিত ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।