বয়স ৩০ হওয়ার আগেই দরকার ৩০টি জীবনঘন অভিজ্ঞতা

বেশির ভাগ মানুষই ৩০ বছর শেষ হওয়ার আগেই নানা কাজের তালিকা করে রাখেন সম্পন্ন করার জন্য। আর ৩০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে স্বাস্থ্যও আপনার অনুকূলে থাকে। আর তা ছাড়া এখনো আপনার ঘাড়ে খুবে বেশি পেশাগত বা পারিবারিক চাপও পড়েনি। সুতরাং এখনই তো সময় মনের সংকীর্ণতা দূর করার জন্য কিছু জীবনঘন অভিজ্ঞতা অর্জনের। তা হতে পারে ড্রাইভিং শেখা বা শিক্ষা ঋণ পরিশোধ করার মতো কাজ। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার এমনই কিছু কাজের তালিকা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক…

১. থাইল্যান্ডে একটি ফুল মুন পার্টিতে যোগ দিন
থাইল্যান্ডের কোহ ফাংগানে এই বন্য ও উদ্দাম বিচ পার্টির আয়োজন করা হয়। এতে থাকেন স্বল্পবসনা সব সুন্দরীরা; আরো থাকে যাদের দেহে নানা ছবি আঁকা; এবং অগ্নি নর্তক-নর্তকীরা। আর সারারাত ধরে আকণ্ঠ পানোৎসবও চলে। তবে একবারের বেশি এ ধরনের পার্টিতে যাবেন না যেন।

২. বিদেশ গমন
বিদেশযাত্রার মাধ্যমে আপনি নিজেকে নিজের আরাম কেদারাটি ছাড়িয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেন।

এর মাধ্যমে আপনি নিজের সম্পর্কে অনেক নতুন বিষয় জানতে পারবেন এবং নতুন দেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন।

৩. ব্যাকআপ প্ল্যান ছাড়াই বর্তমান চাকরি ছেড়ে দিন
তিরিশের আগেই ক্যারিয়ার নিয়ে ভুল করার সবচেয়ে ভালো সময়। এখনই সময় নতুন কিছু করার। অথবা আপনার স্বপ্নের ক্যারিয়ারের পিছু তাড়া করার। এই সময়ে ব্যর্থ হলেও তেমন বেশি কোনো ক্ষতি হবে না। বড়জোর আপনাকে হয়তো সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।

৪. পার্বতারোহণ শিখুন
এটি বিস্ময়কর একটি ব্যায়াম। যা যোগ ব্যায়ামের মতোই দেহের মাংশপেশিগুলোর জন্য দীর্ঘমেয়াদে খুবই উপকারী।

৫. ডিনার পার্টির আয়োজন করে নিজেই সব খাবার রান্না করুন
৩০ বছরের মধ্যেই কীভাবে একটি মুরগি রোস্ট করতে হয় তা আপনার শিখে ফেলা উচিত।

৬. সিনেমার কোনো প্রিয় চরিত্রের মতো পোশাক পরুন
হ্যারিপটার বা ব্যাটম্যানের মতো সিনেমার কোনো প্রিয় চরিত্রের মতো পোশাক পরে নায়ক হওয়ার শখ মেটান।

৭. গ্লাস্টোনবারিতে যান
যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় উৎসব এবং সংগীতের মক্কা হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাত গ্ল্যাস্টোনবারি উৎসব।

৮. ভ্রমণের জন্য ছুটি নিন
তিরিশের আগেই ভ্রমণের জন্য কর্মবিরতি নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময়টাতে বিশ্ব ভ্রমণের মাধ্যমে আপনার অন্তরের চোখ খোলারও সময়। এবং জীবন থেকে আপনি কী চান তা বুঝার সময়।

৯. ম্যারাথনের জন্য প্রশিক্ষণ নিন
এর মাধ্যমে আপনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সবচেয়ে ভালো শিক্ষাটি পাবেন।

১০. ভেনিস ভ্রমণ
বিশ্বের যেকোনো শহরের চেয়ে ভেনিস আলাদা। যা শুধু চোখে দেখেই উপলব্ধি করা সম্ভব। যেভাবে সূর্যাস্ত শহরটিকে আলোকিত করে তা সত্যিই খুব বিস্ময়কর। আর এর শিল্প ও স্থাপত্যর তুলনা মেলা অসম্ভব। রোম এবং ফ্লোরেন্সও কম নয়।

১১. যুদ্ধ করা শিখুন
সেনা সদস্যের সঙ্গে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিলে আপনি নিজেকে আরো ফিট ও শক্তিশালী অনুভব করবেন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাসও বাড়বে এবং কর্মস্থলে আরো আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠবেন।

১২. রেস্টুরেন্টে একা খেতে যান
বন্ধুরা হয়তো আমাদের শিখিয়েছে একা একা রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার মধ্যে কোনো সমস্যা আছে। একা নীরবে বসে খাওয়াটা একটু মানানসই নয় বটে। কিন্তু এতে নিজেকে নিয়ে একটু আরামবোধও হবে আপনার।

১৩. পোষা প্রাণী রাখুন
এতে আপনি আরো বেশি দায়িত্ববান হয়ে গড়ে উঠবেন এবং বিপরীত লিঙ্গের কাছে তাৎক্ষণিকভাবের আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারবেন।

১৪. ইনকা সভ্যতার নিদর্শনগুলো দেখে আসুন
পেরুর পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত কিউস্কো শহর থেকে প্রাচীন স্থান মাচুপিচু সহ ইনকা সভ্যতার নিদর্শনগুলো বেড়িয়ে আসতে চার দিন সময় লাগে। এতে আপনার ২৬ মাইল সিঁড়ি পাড়ি দিতে হবে।

১৫. কোনো একটি ব্যবসা শুরু করুন
আনেক লোকেই করপোরেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার পর বুঝতে পারে তাদের বরং নিজেদেরই কোনো ব্যবসা করা উচিত ছিল। সুতরাং তিরিশের আগেই নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে ফেলা উচিত।

১৬. একটি লে ক্রুসেট কিনে ফেলুন
এটি হয়তো সবচেয়ে দামি প্যান। তবে এটি দিয়ে আপনি যা যা রান্না করতে চান তার ৯৯% রান্না করতে পারবেন। আর সহজে ও স্বাস্থ্যকর উপায়েও রান্না করা সম্ভব এতে।

১৭. টাকা ছাড়াই ইউরোপে ঘুরে বেড়ান
একা নয় বরং ভালো বন্ধুদের দল সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করুন। তবে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য যথেষ্ট টাকা রাখুন।

১৮. কোনো হোয়াইট টাই ইভেন্টে যোগ দিন
হোয়াইট টাই পোশাক হলো সবচেয়ে ফর্মাল অফিশিয়াল ড্রেস কোড। পুরুষদের জন্য এর মানে হলো, একটি কালো টেইলকোট, সাদা ওয়েস্টকোট, ড্রেস শার্ট এবং সাদা বো টাই। নারীদের জন্য, পূর্ণ লম্বা বল গাউন। বিখ্যাত হোয়াইট টাই ইভেন্টগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্রে স্টেট বুকে, নোবেল প্রাইজ উৎসব, কোনো অক্সফোর্ড বা ক্যামব্রিজ বল। কিন্তু এসবের নিমন্ত্রণ পাওয়া অনেক কঠিন। তবে ভিয়েনা অপেরা বল গণভাবে টিকিট বিক্রি করে। যে কেউই চাইলে এতে যেতে পারে।

১৯. কারো পৃষ্ঠপোষকতা করুন বা স্বেচ্ছাসেবী হউন
তিরিশের আগে শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবাটা সহজ। কিন্তু অন্য কারো উপকারের জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করলে আপনি কাজের ব্যস্ততা এবং বিষয়াসক্তি থেকে কিছুটা সময়ের জন্য মুক্তি পাবেন।

২০. গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ঘুরে আসুন
এই স্থানটির মতো ভূতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান আর কোথাও নেই। পৃথিবীর ভূতাত্বিক ইতিহাসে গত প্রায় দুইশ কোটি বছর ধরেই এর উপস্থিতি ছিল।

২১. শিক্ষা ঋণ শোধ করুন
কর্মজীবন শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষা জীবনে লোন নিয়ে থাকলে পরিশোধ করে ফেলুন। নয়তো পরে গিয়ে বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াবে এই ঋণ।

২২. বিশ্বের সবগুলো মর্যাদাপূর্ণ আর্ট গ্যালারি ঘুরে দেখুন
শুধু স্বশরীরে ভ্রমণ করে নয় বরং এখন ইন্টারনেট বা বইয়েও এসব দেখা সম্ভব। লন্ডন, প্যারিস সহ ইউরোপ আমেরিকাজুড়ে এসবের অবস্থান।

২৩. দ্বিতীয় কোনো ভাষা শিখুন
ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়, ভিনদেশি বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব, বিদেশে বসবাস এসব ছাড়াও কর্মজীবনেও এর বেশ কার্যকারিতা আছে।

২৪. ধূমপান ছেড়ে দিন
সাধারণত কিশোর বয়স বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠার পর লোকে ধুমপান শুরু করেন। ফলে তিরিশ বছর হওয়ার আগেই হয়তো আপনি একদশক ধরে ধুমপান করে ফেলেছেন। স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বদভ্যাসটি ছাড়ার এখনই সময়।

২৫. রিও কার্নিভালের অভিজ্ঞতা নিন
পাঁচদিনের এই স্বেচ্ছাচারিতামূলক উৎসব চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়। সাম্বা নৃত্য, রঙরেবঙের পোশাক আর আকণ্ঠ পানের উৎসব এটি।

২৬. ড্রাইভিং শিখুন
ড্রাইভিং শিখলেই একমাত্র আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার জীবনটা কীভাবে এবং কতটা অন্য লোকদের দায়িত্বজ্ঞানের ওপর নির্ভর করে আছে। আর এই বয়সেই ভয়ডর একটু কম থাকে সুতরাং ড্রাইভিং শেখার সবচেয়ে ভালো সময় এটি।

২৭. প্রতি সপ্তাহে একটি করে বই পড়ুন
নতুন নতুন জিনিস শেখার এটাই তো সময়। সুতরাং পট্রতি সপ্তাহে একটি করে নতুন বই পড়ুন।

২৮. নতুন খাবার খান
সময়ের পরিক্রমায় আপনার রুচি বদলে যাবে। যেমন আপনি হয়তো অল্প বয়সে অলিভ বা মাশরুম পছন্দ করতেন কিন্তু পরে আর করেন না। সুতরাং নতুন স্বাদ লাভের জন্য অপরিচিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।

২৯. ভিনদেশের কোনো পরিবারের সঙ্গে থাকুন
ভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে এর চেয়ে ভালো আর কোনো উপায় নেই।

৩০. রাজকীয় ও দামি এক সেট পোশাকের মালিক হোন

সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার