ভাইরাল ভিডিও : ‘হায় মুজিব, হায় মুজিব’ বলে জিঞ্জির চাকু মারে পিঠে!

জাতীয় শোক দিবসের মানববন্ধন। ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে পায়জামা, পাঞ্জাবি ও মুজিব কোট পড়ে জিঞ্জির চাকু দিয়ে শরীরে আঘাত করছিলেন তিনি। এ সময় আরও দুজন অনুসারী শার্ট খুলে একই কাণ্ড ঘটান। ‘হায় মুজিব, হায় মুজিব’ বলে উন্মাদনা সৃষ্টি করেন তারা। কয়েক মিনিট ধরে তাদের এই মাতম চলে। তারা বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানান। খুনিদের আত্মীয়-স্বজনদের সরকারি চাকরি না দেওয়ারও দাবি করেন।

ঘটনাটি চট্টগ্রামের। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বন্দর এলাকার বাসিন্দা ইকবাল আলী ওরফে হাজি ইকবাল আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচির ভিডিও এখন ফেসবুকে ভাইরাল। তার কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যক্তিরা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন ফেসবুকে।

ইকবাল আলী ৩৮ নম্বর দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য দাবি করলেও নগর আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেছেন, ইকবাল এক সময় বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কারণে ৮-১০ বছর আগে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।
জানা গেছে, ইকবাল আলী চট্টগ্রাম নগরের বন্দর থানাধীন ৩৮ সল্টগোলা এলাকার বাসিন্দা। তিনি প্রায় ১৯ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি দেশে চলে আসেন। স্থানীয় রাজনীতিতে নগর আওয়ামী লীগের কোনো ইউনিট কমিটিতে তার নাম নেই। তবে সৌদি আরবের মক্কা ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে তিনি দাবি করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একখণ্ড জমি ইজারা নিয়ে তিনি ট্রাক টার্মিনাল করেছেন। সেখান থেকে ভাড়া পেয়ে সংসার চালান।

ইকবাল আলীর এই কর্মকাণ্ডের ভিডিওটি আজ সোমবার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের চট্টগ্রাম নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন। তিনি বলেছেন, পালের গোদাসহ নিজেদের প্রচারের জন্য যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন তামাশা করছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। না হয় দিনের পর দিন আরও উদ্ভট কিছু দেখতে হতে পারে। এদের এখনই থামান।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার ভিডিওর সমালোচনা প্রসঙ্গে ইকবাল আলী আজ বিকেলে টেলিফোনে সাংবাদিকদের বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের ফিরিয়ে এনে শাস্তি দিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালন করেছি। সেখানে ধর্মীয় আলোকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ করেছি। আমি তো রক্তাক্ত হইনি।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও সম্পর্কে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমার মন্তব্য করার রুচি আসছে না। আমি ক্ষুব্ধ।