ভৌগোলিক কারণে আগে–পরে পাকে আম গবেষণা

দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল আম। সারা দেশেই উৎপাদন বাড়ছে ফলটির। গুরুত্বের কারণে আমগাছকে জাতীয় বৃক্ষ বলে সরকার ঘোষণা করেছে।

বিজ্ঞানীরা কোন আম কোন সময়ে কেন পাকে, তার একটি বিজ্ঞানসম্মত সময়কাল বের করেছেন। ওই সময় ধরে আম পাড়া হলে এবং বাজারে তুললে তাতে সুমিষ্ট ফলটির পুষ্টিগুণ ঠিক থাকবে। দামও ভালো পাওয়া যাবে। তাঁরা মনে করছেন, এতে ফল নষ্ট কম হবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাটির গুণাগুণ ও আবহাওয়াগত কারণেই মূলত একেক জেলার আম একেক সময়ে পাকে। এ ক্ষেত্রে আমের জাত কোনো বড় বিষয় নয়। ফলে জাতের চেয়ে প্রতিবেশ ও আবহাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে দেশের প্রধান আম উৎপাদনকারী এলাকাগুলোকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করে এ গবেষণা সম্পন্ন করা হয়েছে। যেমন অঞ্চল-১: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি; অঞ্চল-২: যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা; অঞ্চল-৩: নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং অঞ্চল-৪: নওগাঁ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়।

এসব অঞ্চলে আম উৎপাদন ও সংগ্রহের ওপর প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত (মাটির আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, সমুদ্র সমতল থেকে উচ্চতা, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ ও ভূ–উপগ্রহের তথ্য) সংগ্রহ করা হয়েছে। সব তথ্য-উপাত্ত যথাযথ বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা যায়, অঞ্চল-১–এ সবচেয়ে আগে আম পাকে। আর সবশেষে আম পাকে অঞ্চল-৪ এলাকায়।

গবেষণায় ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মৌসুমে কোন আম কখন পাকে এবং ওই সময়ের আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। একই সঙ্গে আম উৎপাদনের ওই চার অঞ্চলের ভৌগোলিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়।

এ গবেষণা প্রবন্ধ অতি সম্প্রতি মর্যাদাপূর্ণ বিজ্ঞান সাময়িকী সাসটেইনিবিলিটিতে প্রকাশিত হয়েছে। কানাডার সেইন্ট মেরি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও ভারতের প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইটি যৌথভাবে গবেষণাটি করেছে।