মমতার প্রচারে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করল ইসি

২৪ ঘণ্টা নির্বাচনী প্রচার করতে পারবেন না ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এতে বলা হয়েছে, প্ররোচনামূলক বক্তৃতার অভিযোগে মমতাকে পাঠানো নোটিশের জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট না হওয়াতেই ২৪ ঘণ্টার এই নিষেধাজ্ঞা।

এ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে তৃণমূল।

দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মানুষ এর জবাব দেবে। পক্ষপাতদুষ্ট কমিশন বিজেপির শাখা সংগঠন। ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবে মানুষ।’

৩ এপ্রিল মমতা তারকেশ্বরের সভা থেকে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) আব্বাস সিদ্দিকির নাম না করে মন্তব্য করেন। তার পরেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। বিজেপি এলে মনে রাখবেন সমূহ বিপদ, সবচেয়ে বেশি আপনাদের।’

কমিশনের যুক্তি, ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী তার প্রার্থীপদ খারিজও করা যেতে পারে।
তা নিয়েই নোটিশ পাঠায় কমিশন।

এরপর কোচবিহারের জনসভা থেকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘নির্দেশে’ই সিআরপিএফ-এর একাংশ বিজেপির হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মমতা বলেন, ‘সিআরপিএফ যদি গণ্ডগোল করে, মেয়েদের একটা দল মিলে ওদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল ভোট দিতে যাবেন।
শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট করবেন না। ৫ জন ঘেরাও করবেন। ৫ জন ভোট দেবেন।’

কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার মন্তব্যে এর আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং কোচবিহারের জেলা শাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। তার জন্য মমতাকেও নোটিশ পাঠানো হয়।

গত শনিবারই কমিশনকে সেই নোটিশের জবাব দেন মমতা। কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য সংক্রান্ত অভিযোগের জেরে নির্বাচন কমিশনের পাঠানো শোকজ নোটিশের জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার কমিশনে পাঠানো জবাবে তৃণমূলনেত্রী লিখেন, ‘কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) প্রতি আমার সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। দেশের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তায় তাদের অবদান খুব উঁচুতে’।

এর ফলে মমতার মঙ্গলবারের সফরসূচি বাতিল হলো।

তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বারাসত, বিধাননগর, হরিণঘাটা ও কৃষ্ণগঞ্জে মমতার সভা করার কথা ছিল। শনিবার কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর পরে সেখানে যাবেন বলে রবিবার ঘোষণা দিয়েছিলেন মমতা। সেই ঘোষণার পরেই কমিশন ৭২ ঘণ্টার জন্য যে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের শীতলখুচিতে যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর পরে মমতার প্রচারে নিষেধাজ্ঞা।

তৃণমূলের বক্তব্য, গোটাটাই হচ্ছে বিজেপির নির্দেশে।

সূত্র: আনন্দবাজার