মেসির সেই গোলটিই সর্বকালের সেরা (ভিডিও)!

১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডিয়েগো ম্যারাডোনার সেই একক প্রচেষ্টার গোলটি সর্বকালের সেরা হিসেবে বিবেচিত। যে গোলটি পেয়ে গেছে ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’ তকমাও। তবে সেটি মানুষের মুখে মুখে। ভোটের লড়াইয়ে ম্যারাডোনার সেই গোলটিকে হারিয়ে সর্বকালের সেরা গোলের খেতাব কেড়ে নিল ২০০৭ সালে গেটাফের বিপক্ষে করা লিওনেল মেসির সেই গোলটি।

সত্যিই তাই। কিংবদন্তি ম্যারাডোনার সেই কিংবদন্তিতূল্য গোলটিকে হারিয়ে সর্বকালের সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত হলো মেসির গোলটি। এখানে অবশ্য একটা পাদটীকা অত্যন্ত জরুরি। মেসির গোলটিকে সর্বকালের সেরা হিসেবে নির্বাচন করেছে বার্সেলোনার সমর্থকেরা।

সম্প্রতি ‘সর্বকালের সেরা গোল’ নির্বাচনের জন্য অনলাইনে ভোটাভুটির আয়োজন করেছিল বার্সেলোনা। অনলাইনের ওই ভোটে প্রায় ৫ লাখ দর্শক ভোট দিয়েছেন। প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে মেসির গোলটিই সর্বকালের সেরা হিসেবে নির্বাচিত।

পেশাদার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনাও দু’বছর বার্সেলোনায় খেলেছেন। তবে বার্সেলোনার সমর্থকদের হৃদয়ে মেসি যতটা জায়গা নিয়ে আছেন, ম্যারাডোনার তার একশ ভাগের এক ভাগও নন। দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ক্লাব বার্সেলোনাকে দুহাতে ভরিয়ে দিয়েছেন মেসি। বার্সেলোনার ইতিহাসের পাতায় পাতায় মেসির নাম।

মেসির সেই অসাধারণ গোলটিকে সর্বকালের সেরা নির্বাচন করে বার্সেলোনা সমর্থকেরা তাই যেন কিছুটা দায় শোধ করল! সমর্থকদের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পেয়ে অভিভূত মেসি। তার গোলটিকে সেরা নির্বাচন করায় বার্সেলোনার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১০ বছর আগে গেটাফের বিপক্ষে করা অবিশ্বাস্য সেই গোলটির ভিডিও-ও আপ করেছেন মেসি।

শুধু বার্সেলোনার সমর্থকেরাই ভোট দিয়েছেন। তাই অনেকে এখানে স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্বের গন্ধ খুঁজতেই পারেন। তবে অন্যের রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ না করে চাইলে আপনিও ম্যারাডোনা ও মেসির গোল দুটির মধ্যে কোনটি সেরা, তা অনায়াসেই নির্বাচন করতে পারেন। কারণ, আপনার সুবিধার জন্য ম্যারাডোনা ও মেসির সেই দুটো গোলেরই একটা সম্মিলিত ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউটিউব। আপনার বিবেচনার জন্য সেই ভিডিওটি এই প্রতিবেদনের নিচে জুড়ে দেওয়া হলো।

ভিডিও দেখে কোনটি সেরা, সেটি বেছে নেওয়ার দায়িত্ব আপনার। তবে গোল দুটির বর্ণনায় এতটুকু বলা যায়, দুটো গোলই প্রায় একই রকম। ২০০৭ সালে গেটাফের বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচে তরুণ মেসিও প্রতিপক্ষের প্রায় হাফডজন খেলোয়াড়কে কাটানোর পরে গোলরক্ষককেও কাটিয়ে গোলটি করেছিলেন। যে গোলটি শুধুই তার একক প্রচেষ্টার ফসল। তার কোনো সতীর্থের অবদান ছিল না।

পক্ষান্তরে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যারাডোনার দ্বিতীয় গোলটিও ছিল একক প্রচেষ্টার ফসল। তিনিও ইংল্যান্ডের অন্তত হাফ ডজন খেলোয়াড় এবং শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষককেও কাটিয়ে গোলটি করেন। দুজনেইড গোল করেন ডান কোনা থেকে। তবে ম্যারাডোনার চেয়ে মেসি বল নিয়ে অনেকটা বেশি পথ পাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

ম্যারাডোনা বলটা পান ইংল্যান্ডের অর্ধে। মেসি বল পান নিজেদের অর্ধে। সেখানেই গেটাফের দুজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে তীব্রগতিতে দৌড় শুরু করেন। সামনে যিনিইড বাধা দিতে এসেছেন গতি আর শারীরিক কৌশলে সবাইকে বোকা বানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষককেও কাটিয়ে ডান পায়ের আলতো টোকায় বল জড়িয়ে দেন জালে। ম্যারাডোনাও প্রায় একই কায়দায় গোলটা করেন।

নিচের ভিডিওটিতে দুটো গোলই দেখতে পাবেন। কোনটিকে সেরা মানবেন, ভিডিও দেখে তা আপনিই নির্বাচন করুণ।