পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়

মেয়ের বাড়িতে বুট, মুড়ি না দেয়ায় স্ত্রীসহ শশুর শাশুরিকে পেটেলেন জামাতা!

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মেয়ের বাড়িতে রমজান মাসে বুট, মুড়ি না দেয়ায় শশুর শাশুরিসহ স্ত্রীকে ঘরের দরজা বন্ধ করে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জামাতার বিরুদ্ধে।

রোববার ইফতারের আগ মূহুর্তে উপজেলার নীলগঞ্জ হাজিপুর গ্রামের এঘটনায় আহত রাহিমা বেগম (৫০), আফসের আলী (৬৫) ও আখিঁ বেগম (২১) এদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

হাসপাতালের শয্যায় থেকে আখিঁ বেগম অভিযোগ করে কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, গত বছর ১৫ এপ্রিল পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় হাজিপুর গ্রামের আবু সাজির পুত্র সফিকের সাথে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবীতে বিভিন্ন সময় নির্যাতন শুরু করেন মাদকাসক্ত স্বামী সফিক ও তার পরিবার। শশুর বাড়ির লোকজনের দাবী মেনে না নেয়ায় ননদের পরিধেয় পুরান জামা কাপর পড়তে দিতো স্বামী বাড়ির লোকজন। এছাড়া সম্পাদশালী ননদের স্বামী বাড়িতে বেড়াতে এলে তার শরীর টিপে দিতে বাধ্য করা হতো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন আখিঁ বেগম।

এমনকি বিভিন্ন সময়ে বাবার বাড়ি থেকে মৌসুমি ফল এবং শীতকালীন সময়ে রুটি পিঠা ও হাসের মাংস না পাঠানোর অভিযোগ তুলে নির্মম নির্যাতন করা হতো বলেও অভিযোগ আখিঁ বেগমের।

ঘটনার আগের দিন রমজান মাসে বাবার বাড়ি থেকে বুট, মুড়ি পাঠানো হয়নি কেনো এমন অভিযোগ তুলে মারধর করে সফিক।

আঁখি বেগমের মা রাহিমা বেগম জানান, মেয়েকে মারধর করার ঘটনা শুনে আমার স্বামীকে নিয়ে জামাতার বাড়িতে যাই। এসময় বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্রই আমার মেয়ের শাশুরি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায় ঘরের দরজা বন্ধ করে জামাতা সফিক, তার বাবা, মা চেয়ার দিয়ে এলাপাথারী মারধর শুরু করে। এসময় আমার মেয়ে আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে এলে সবাই মিলে আখিঁর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।

তিনি আরো জানান, মারধর শেষে কয়েক ঘন্টা ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখে।

পরে স্থানীয়রা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে।

উদ্ধারকারী মতি সাজি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সফিক আমার আত্মীয় বটে, তবে অন্যায়ের সাপোর্ট করবো না।

এবিষয়ে অভিযুক্ত জামাতা সফিকের মুঠোফোনে কথা হলে মারধরের ঘটনাসহ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তার বোন জামাতার কাছে ফোন ধরিয়ে দেন। পরে তার বোন জামাতা পটুয়াখালীর শাহিন পরিচয় দিয়ে উচ্চস্বরে কথা বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি কলাপাড়া থানা পুলিশ অবগত নয়। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।