মেয়ের মান রাখতে বাবার পড়াশোনা শুরু!

ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা রেজুয়ানুল হক। তার মেয়ে দু’বছর পর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নেবে। মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ ও মেধা দেখে মুগ্ধ রেজুয়ানুল। কিন্তু সে নিজে অশিক্ষিত। মেয়ের যোগ্য পিতা হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ হয় তার। তাই মেয়ের সম্মান রক্ষা করার জন্য এবং সমাজে শিক্ষিত মেয়ের শিক্ষিত পিতা হিসেবে পরিচয় দেয়ার জন্য ৪৫ বছর বয়সে লেখাপড়া শুরু করেছেন রেজুনাল হক।

ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার সমিরউদ্দীন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলাদেশ কারীগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নবম শ্রেণির (ভকেশনাল) পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন তিনি।

বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার বড় পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ভোকেশনাল শাখা থেকে (৯ম) শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষায় “৭১-ড্রেস মেকিং” ট্রেডের পরিক্ষা শেষে রেজুয়ানুল তার এই বয়সে পড়ালেখা করার কারণগুলো এভাবেই জানাচ্ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে শিক্ষিত হয়ে সমাজে যেন তার শিক্ষিত বাবার পরিচয় দিতে পারে সে কারণেই এ চেষ্টা। আমি লেখাপড়া করে অন্যান্যদের ন্যায় দেশের উন্নয়নে অংশ নিতে চাই।

রেজুয়ানুল হক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বড়গাছিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। দরিদ্র ঘরের সন্তান হওয়ায় পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি তার। কিন্তু এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা অর্জনের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে এখন। আর তার মেয়েও পড়ালেখা করছে। তাই রেজুয়ানুল মনে করেন তার পড়ালেখার প্রতি উৎসাহ দেখে শিক্ষাবিমুখ অনেক পরিবারই তাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করাবেন।

বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, রেজুয়ানুলের এ বয়সে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ আমাদের সমাজে এক উজ্জল দৃষ্টান্ত। তাকে দেখে পড়ালেখার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা নিজেদের লেখাপড়ার প্রতি গুরুত্ব বাড়াবেন বলে মনে করছি।