যশোরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ১০জন

যশোরের মণিরামপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শ্যামকুড় ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১১ জুলাই-২০২২) দুপুরে ও রাতে পৃথক সংঘর্ষে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনসহ দুই গ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, অজিত ঘোষ, নারী ইউপি সদস্য ছবুরোন্নিছা, মামুন হোসেন, হাবিবুর রহমান ও আব্দুর রহিমকে মণিরামপুর, কেশবপুর ও যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের বাম পা ভেঙে গেছে। তিনি যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

এ ঘটনায় সোমবার রাতে সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনিরের ছয় অনুসারীকে পুলিশ আটক করেছে। তারা হলেন জামলা গ্রামের হুসাইন, শ্যামকুড় গ্রামের ফজলুর রহমান, মুজগুন্নি গ্রামের বাবুল হোসেন, রায়হান হোসেন, রেজাউল করিম ও হাফিজুর রহমান। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

শ্যামকুড় ইউপির ২ নম্বর (হাসাডাঙ্গা-নাগোরঘোপ) ওয়ার্ডের সদস্য ইকরামুল কবির জানান- সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ইউনিয়নের মুজগুন্নি আমিরের মোড়ে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা জানাতে যান। সেখানে সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি একটা চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনও দলবল নিয়ে ওই দোকানে যান। কিছুক্ষণ পরে মনিরুজ্জামান মনির ভাই যুবলীগের নেতা আবুল কালাম, যুবলীগের হোসেন আলীসহ ২৫-৩০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চেয়ারম্যান আলমগীর ও তার লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। মারামারির একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চেয়ারম্যান আলমগীর। এ সময় শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান, অজিত ঘোষ, সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ছবুরোন্নিছা, মামুন হোসেনসহ কয়েকজন আহন হন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন যশোর সদর হাসপাতালে এবং সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ছবুরোন্নিছা কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকিরা মণিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে হামলার ঘটনায় ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন শ্যামকুড় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি। তিনি বলেন- গতকাল সোমবার দুপুরে বাঙ্গালীপুর গ্রামে আমার অনুসারী হাবিবুর রহমানকে মারেন বর্তমান চেয়ারম্যানের চাচা আইয়ূব হোসেন। বিকেলে আলমগীর নিজে মুজগুন্নি গ্রামের হায়দার আলীকে মারার হুমকি দেন। এরপর সন্ধ্যায় গিয়ে তারা মারপিট করেন। আজ মঙ্গলবার (১২ জুলাই-২০২২) সকালে আলমগীরের নেতৃত্বে আমার অনুসারী মুজগুন্নি গ্রামের আব্দুর রহিমের ওপরও হামলা হয়েছে। আমার অনুসারীদের যেখানে পাচ্ছে সেখানে মারছে আলমগীর ও তার লোকজন। আমার লোকজন মার খাচ্ছে আবার আমাদের নামে উল্টো মামলা হচ্ছে। গতকাল সোমবার রাতে পুলিশ আমার অনুসারী ছয়জনকে আটক করেছে।

এ বিষয়ে মণিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হান্নান জানান- আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শ্যামকুড় ইউনিয়নের দুই চেয়ারম্যানের মধ্যে মারামারি হয়েছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
মণিরামপুর থানার ওসি নূর-ই-আলম সিদ্দীকি জানান- মারামারির ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।