যেভাবে বাড়িতেই করবেন বডি ম্যাসাজ

চারিদিকে থাই স্পা, বডি ম্যাসাজের বিজ্ঞাপন, গলিতে গলিতে সুদৃশ্য বডি ম্যাসাজ পার্লার। কারণ বাড়িতে শরীর ম্যাসাজ করাটা যেমন ঝামেলার, তেমনি যত্ন করে কেউ আপনাকে ম্যাসাজ করে দেবেও না।

তাই সারা মাসের বা সপ্তাহের ক্লান্তি আর পা ব্যাথা, গা ব্যাথার সমাধান ওই ম্যাসাজ পার্লারই। যেখানে শরীর চনমনে হলেও পকেট অসুস্থ হয়ে যায়।

তাহলে উপায়? কিভাবে পকেট রক্ষা করেও বডি ম্যাসাজ করা যায়? চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি নিজেই নিজের শরীর মালিশ করতে পারবেন।

তবে একটা বিষয় এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে। শরীরের প্রতিটি অংশে একই রকম পদ্ধতিতে মালিশ করা যায় না। দেহের প্রতিটি অংশে যাতে ভাল ভাবে রক্ত সঞ্চালিত হতে পারে, তার জন্য সঠিক মালিশ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। সঠিকভাবে মালিশ করলে রক্তসঞ্চালনে উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে ত্বকও বেশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তাহলে দেখে নেওয়া যাক, বাড়িতেই কিভাবে বডি ম্যাসাজ করা যায়।

পদ্ধতি ১
বডি ম্যাসাজের সময় উপযুক্ত তেল বা ক্রিম বেছে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে তরল উপাদান বিশিষ্ট ক্রিম ব্যবহার করা সবথেকে ভাল। যদি ইচ্ছা হয়, তাহলে ভারী জাতীয় তেলও ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, নারকেল তেল, সরিষার তেল অথবা তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন। তবে তেলটা ব্যবহার করার আগে হালকা গরম করে নিলে ভাল হয়।

পদ্ধতি ২
বডি ম্যাসাজ করার সময় পোশাক পরে থাকবেন না। তাই যখন একা থাকবেন, তখন বডি ম্যাসাজ করতে পারেন।

পদ্ধতি ৩
বডি ম্যাসাজ শুরু করা উচিত পা থেকে। প্রথমে পায়ের পাতা এবং পায়ের আঙ্গুল মালিশ করতে হবে। এরপর পায়ের উপরিঅংশে মালিশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মালিশ করার সঠিক পদ্ধতি হল পায়ের উপরিঅংশ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত। সময় ধরে প্রতিটি পায়ে ৫ মিনিট করে মালিশ করতেই হবে।

পদ্ধতি ৪
পায়ের মালিশ যথাযথভাবে হয়ে গেলে মালিশ করতে হবে আমাদের নীচ অংশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাঁটু। হাঁটুতে ব্যাথা হোক আর না হোক, নিয়মিত মালিশ করা খুবই দরকার। কারণ শরীরের নীচের অংশের রক্তসঞ্ছালনের প্রধান অংশ হল এটি। হাঁটু মালিশ করতে হলে দুহাতে চক্রাকার পদ্ধতিতে মালিশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাঁটুর ওপর চামড়া খুবই নরম হয়। তাই কখনোই খুব জোরে মালিশ করা উচিৎ না।

পদ্ধতি ৫
হাঁটু থেকে এবার এগিয়ে আসতে হবে ঊরুর দিকে। শরীরের এই অংশে সবথেকে বেশী তেল বা ক্রিম লাগে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, তেল যেন একটু গরম থাকে। চক্রাকার পদ্ধতিতে ঊরুর নীচের অংশ মালিশ করতে করতে উপরের দিকে উঠতে হবে। খেয়াল রাখবেন, ঊরুর উপরি অংশের পাশেই আমাদের সবথেকে বেশী স্পর্শকাতর অঙ্গগুলি থাকে। সেখানে যেন কোনওভাবেই আঘাত না লাগে।

পদ্ধতি ৬
এবার মালিশ করতে হবে পেটে। যেখানে সবার আগে এবং সবথেকে বেশী মেদ জমা হয়। পেট মালিশ করতে যতটা প্রয়োজন ততটাই তেল নিতে হবে। কারণ কম তেল ব্যবহার করলে খুব সহজেই পেটে মেদ জমার সম্ভাবনা থেকে যায়। পেটে মালিশ করার সময় চক্রাকার পদ্ধতিতে করতে হবে। বুকের মাঝখান থেকে তেল ধীরে ধীরে ঢেলে তারপর পেটে ভালো করে মালিশ করতে হবে। বেশ খানিকক্ষণ সময় নিয়েই পেটে মালিশ করতে হবে, যাতে পুরো পেটে ভালো করে তেল লাগানো যায়।

পদ্ধতি ৭
সবথেকে শেষে মালিশ করতে হবে কাঁধ। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে মালিশ করতে হবে এখানে। এক হাতে তেল নিয়ে অন্যদিকের কাঁধে মালিশ করতে হবে। এক্ষেত্রে গলার মাঝখান থেকে কাঁধ অবধি চক্রাকার পদ্ধতিতে মালিশ করতে হবে। এরপর হাতে মালিশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাত থেকে কাঁধ এরপর হাতের তালু থেকে কাঁধ অবধি মালিশ করতে হবে। তবে খুব জোরে জোরে এবং লম্বা টান দিয়ে মালিশ করতে হবে না। তবেই উপকার মিলবে।

পদ্ধতি ৮
এবার হাতের তালু মালিশ করতে হবে। হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে মালিশ করে নিতে পারেন।