রাজশাহীতে ‘জঙ্গি বাড়ি’ থেকে নারী-শিশুসহ আটক ১২

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের ডাঙাপাড়া গ্রামের একটি ‘জঙ্গি বাড়িতে’অভিযান চালিয়ে নারী ও শিশুসহ ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে এই অভিযানের সময় ওই বাড়ি থেকে দুইটি সুইসাইডাল ভেস্ট ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী।

আটকরা হলেন- বাড়ির মালিক রমজান আলী, তার স্ত্রী আয়েশা খাতুন, তাদের দুই ছেলে ইব্রাহীম হোসেন, ইসরাফিল হোসেন, মেয়ে হাওয়া খাতুন, ইব্রাহীমের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন, ইসরাফিলের স্ত্রী হারেসা খাতুন, জামাতা রবিউল ইসলাম ও চার শিশু। এই শিশুদের মধ্যে হাওয়া খাতুনের এক ও মর্জিনা খাতুনের তিন শিশু কন্যা রয়েছে। যাদের বয়স এক মাস থেকে নয় বছর পর্যন্ত।

রমজান আলী উপজেলার গৌরাঙ্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী জানান, রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও রাজশাহী জেলা পুলিশ ইব্রাহীমের বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এসময় ওই বাড়ি থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে বলা হয়। পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে ওই বাড়ি থেকে ইব্রাহীম, ইসরাফিল ও তাদের ভগ্নিপতি রবিউল বের হয়ে আসেন।

পরে বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে দুইটি সুইসাইডাল ভেস্ট, একটি ৭.৬২ মডেলের এমএম বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। এ সময় বাড়িতে অবস্থান করা চার শিশুসহ অন্যদেরও আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

সুমিত চৌধুরী আরও বলেন, ওই বাড়িতে একটি শক্তিশালী বোমাসহ কিছু বিস্ফোরকদ্রব্য রয়েছে। বাড়িটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। বোমা নিস্ক্রিয়কারী টিম আসার পর ওই বোমাসহ বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধার করা হবে বলে জানান তিনি।

জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোয়াজ্জেম হোসেন ভুঁঞা বলেন, ইব্রাহীম, ইসরাফিল ও রবিউল জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারের পর তাদের তানোর থানায় নেয়া হয়। বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যে এ অভিযান চালানো হয়।

পাঁচন্দর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম মুঞ্জু বলেন, ১০ থেকে ১২ বছর ধরে রমজান আলীর পরিবারের সদস্যরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদের নামাজ পড়তেন। চলতি রমজান মাসেও তারা সৌদি আবরের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে থেকে রোজা রাখা শুরু করেন। গত বছর রমজান আলী ও তার স্ত্রী আয়শা বেগম হজ করেছেন।

তিনি জানান, ইব্রাহীম ও ইসরাফিল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছেন। বর্তমানে ইব্রাহীম বাড়িতে সার-কীটনাশকের দোকান দিয়ে ব্যবসা দেখাশোনা করেন। আর ইসরাফিল জমি চাষাবাদ করেন। হাওয়া খাতুনের স্বামী রবিউলের বাড়ি পাশের গ্রামের চকপাড়ায়। রবিউল কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। স্ত্রীর সন্তান হওয়ার পর থেকে রবিউল শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন বলে জানান মঞ্জুরুল ইসলাম।