রাজ্জাকের সেরা দশ চলচ্চিত্র

১৯৮০ সালে মুক্তি পায় রাজ্জাক অভিনীত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ছুটির ঘন্টা। ছবিটি পরিচালনা করেছেন আজিজুর রহমান। ঈদের ছুটিতে স্কুলের বাথরুমে আটকে পড়ে ১২ বছরের এক ছাত্র। সেখানে খাবার আর পানির কষ্টে কাটে তার ১১ দিন। স্বজনদের প্রতীক্ষার মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে এক করুন চিত্র। ছবিটির মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তখনকার শিশু শিল্পী সুমন। এর গুরুত্বপূর্ণ ‘আব্বাস’ চরিত্রে ছিলেন রাজ্জাক। এতে তিনি স্কুলের দপ্তরির ভূমিকায় অভিনয় করেন। ছবিটিতে আরো আছেন, সাবানা, সুজাতা, শওকত আকবর এবং এ টি এম শামসুজ্জামান। ছবিটির জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ছিলো, ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী এবং একদিন ছুটি হবে’।

রংবাজ
রাজ্জাক-কবরী জুটির অন্যতম সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর একটি রংবাজ। এ চলচ্চিত্রে রাজা নামে এক রংবাজের চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক। আর বস্তির মেয়ে মালা চরিত্রে ছিলেন করবী। এ ছবিটিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছন আনোয়ার হোসেন। ১৯৭৩ সালে জহিরুল হক পরিচালিত ছবিটির মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন রাজ্জাক। ছবির ‘হৈ হৈ হৈ রঙিলা’, ‘সে যে কেনো এলো না’ গান দু’টো আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।’

নীল আকাশের নিচে
১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘নীল আকাশের নিচে’ সিনেমাটি। কাহিনীকার ছিলেন ইসমাইল মোহাম্মাদ। এ ছবির সবগুলো গানই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। গানগুলোর মধ্যে ছিলো ‘হেসে খেলে জীবনটা’, ‘নীল আকাশের নিচে আমি’, ‘গান হয়ে এলে’ এবং ‘প্রেমের নাম বেদনা’। ছবিতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক ও কবরী। আরো আছেন আনোয়ার হোসেন, রোজী সামাদ প্রমুখ।

জীবন থেকে নেয়া
একটি চলচ্চিত্র, একটি চাবির গোছা, একটি আন্দোলন এবং একটি দেশ- এই ছিলো ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্রটি। কালজয়ী নির্মাতা জহির রায়হানের পরিচালনায় ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে। এটিই জহির রায়হানের শেষ ছবি। সামাজিক এ ছবিতে তৎকালীন বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনকে রূপকের মধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটিতে রাজ্জাকের সঙ্গে আরো অভিনয় করেন, সুচন্দা, রোজী সামাদ, খান আতাউর রহমান, রওশন জামিল, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। এই ছবিতে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি চিত্রায়িত হয়েছিলো, যা পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এছাড়া বাকি গানগুলো হলো- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ কারার ওই লৌহকপাট’ এবং ‘এ খাঁচা ভাঙবো আমি কেমন করে’।

আলোর মিছিল
নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। এতে রাজ্জাকের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ববিতা, ফারুক, সুজাতা প্রমুখ। ছবিটিতে সংগীত পরিচালনা করেছেন খান আতাউর রহমান এবং মোস্তাফিজুর রহমান। ছবিটিতে সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া ‘এই পৃথিবীর পরে’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

ময়নামতি
রাজ্জাকের ময়নামতি সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭৯ সালে। পরিচালনা করেছেন কাজী জহির। ২০১৪ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে ‘অনেক সাধের ময়না’ নামে ছবিটি রিমেক করেন পরিচালক জাকির হোসেন রাজু। যেখানে রাজ্জাক এবং করবীর স্থলাভিষিক্ত ছিলেন বাপ্পি ও মাহি।’ ময়নামতির ‘অনেক সাধের ময়না আমার’ এবং ‘ডেকোনা আমারে তুমি’ গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়।

অনন্ত প্রেম
ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৭ সালে। রাজ্জাক-ববিতা জুটির সুপারহিট ছবি এটি। সিনেমাটিতে আরো ছিলেন রওশন জামিল, আনোয়ারা, এ টি এম শামসুজ্জামান, ব্লাক আনোয়ার প্রমুখ।

বেঈমান
রাজ্জাক অভিনীত আলোচিত ও সফল ছবি ‘বেঈমান’। তার নায়িকা ছিলেন কবরী। গানগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ‘বেঈমান’ পরিচালনা করেন রুহুল আমিন।

বড় ভালো লোক ছিল
‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুশ’ কিংবা ‘তোরা দেখ দেখ রে চাহিয়া’ গানগুলো যারা শুনেছেন তারা জানেন ছবিটির নাম। ‘বড় ভালো লোক ছিল’ মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এটি রাজ্জাককে অভিনেতা হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব এনে দেয়। পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ছবিটিতে তার সহশিল্পী ছিলেন প্রবীর মিত্র, অঞ্জু ঘোষ ও সাইফুদ্দিন আহমেদ।

স্বরলিপি
রাজ্জাক অভিনীত ‘স্বরলিপি’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে। সেবছর রাজ্জাকের আরো প্রায় দশটি সিনেমা মুক্তি পায়। এত তার নায়িকা ছিলেন ববিতা। ছবিটি পরিচালনা করেন নজরুল ইসলাম। এই ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছিলো ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি। তবে অভিযোগ আছে, ছবিটি নির্মিত হয়েছিলো উত্তম কুমারের ‘দেয়া নেয়া’ ছবির অনুকরণে।