রানির পর এবার চারুর বিশ্ব রেকর্ড

রানির পর সাভারে এবার বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুকে জায়গা করে নিয়েছে চারু নামের খর্বাকৃতির আরেকটি গরু। চারুর মতো শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে খামারেই বেড়ে উঠেছিল রানিও।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সাভারে আশুলিয়ার চারিগ্রাম এলাকায় শেকড় এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সুফিয়ান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) গিনেস কর্তৃপক্ষ চারুকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট জীবিত গরুর স্বীকৃতি দিয়ে ই-মেইল পাঠায়। এর আগে ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শেকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ গিনেস বুকে ই-মেইলের মাধ্যমে আবেদন করে।

খামার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চারু নামের গরুটির জন্ম ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। সে হিসেবে তার বয়স আড়াই বছর। চারুর এখন চার দাঁত। উচ্চতা ২৩ দশমিক ৫০ ইঞ্চি, লম্বা ২৭ ইঞ্চি ও ওজন ৩৯ কেজি।

২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর গিনেস বুকে মৃত গরু হিসেবে রেকর্ড গড়া রানির উচ্চতা ছিল ২০ ইঞ্চি, লম্বায় ২৪ ইঞ্চি ও ওজন ছিল ২৬ কেজি।

রানিকে দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা খামারের কর্মচারী মো. মামুন বলেন, আমাদের শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ খামারে অনেক রকমের পশু-পাখি পালন করি। রানি মারা যাওয়ার পর প্রায় ছয় মাস আগে চারুকে আমরা সিলেট থেকে সংগ্রহ করেছি। যেভাবে রানিকে সংগ্রহ করা হয়েছে সেভাবেই চারুকে আনা হয়েছে। এরপর থেকে এ খামারে চারুকে প্রাকৃতিক খোলামেলা পরিবেশে পালন করছি। আগে যেহেতু আমাদের রানি মারা গেছে তাই চারুর প্রতি একটু বেশি যত্ন নেই। স্যাররা এখানে আসার পর ওর নাম চারু দিয়েছে। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী একাধিকবার চারুর মাপের ছবি এবং ভিডিও পাঠানো হয়েছে।

শিকড় অ্যাগ্রোর পশু চিকিৎসক প্রতি দু’সপ্তাহ পরপর চারুকে দেখতে আসেন এবং চারুর ওজন, শরীর চকচকে আছে কি না, গঠন বাড়ছে কি না এসব দেখেন।

খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাজী সুফিয়ান বলেন, অল্প কদিনেই রানির উল্লেখযোগ্য ভক্ত তৈরি হয়েছিল। আর তাই বেশিরভাগ মানুষই রানির মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি। আমরা অনেক টাকায় বিক্রির অফার পেয়েও কেনো বিক্রি করিনি সেটা নিয়ে অনেকে বিদ্রূপ করেছেন। কেউ কেউ আমাদের গাফিলতির কথা বলে আমাদের বকাও দিয়েছেন। ওই সময়টায় ভীষণ খারাপ লাগলেও আমরা দাঁতে দাঁত চেপে পরিস্থিতি মেনে নিয়েছিলাম। আসলে রানির প্রতি সবার ভালোবাসাটা আমরা বুঝতাম।

তিনি আরও বলেন, রানির মৃত্যুর পর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ শোক প্রকাশ করে আমাদের ই-মেইল পাঠায়। তারা জানান, রানির সম্মানার্থে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত ছোট গরু হিসেবে আরও একটা ক্যাটাগরি তারা চালু করবেন। যারা শিকড় অ্যাগ্রো সম্পর্কে জানেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন আমাদের সুদক্ষ এবং নির্ভরশীল কর্মীবাহিনী প্রতিদিনই দেশের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ান। রানির জীবদ্দশায়ই আমাদের সংগ্রহশালায় নতুন চমক যোগ হয় ৪ দাঁতের প্রাপ্তবয়স্ক দেশীয় প্রজাতির বামন গরু চারু। যার উচ্চতা ২৩ দশমিক ৫০ ইঞ্চি, লম্বা ২৭ ইঞ্চি এবং ওজন ৩৯ কেজি। যাকে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ স্বীকৃতি দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ আমাদের মে-ইলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চারুকে নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে সুফিয়ান বলেন, আমাদের ইচ্ছে ছিল বিশ্ব রেকর্ডধারী রানিকে সরকারকে উপহার হিসেবে দেওয়া। যেন সরকারের তত্ত্বাবধানে রানি তার জীবনের সর্বোচ্চ সময়টা উপভোগ করতে পারে। কিন্তু রানি অকালে চলে যাওয়ায় সে সুযোগটা আর আমরা পাইনি। এদিকে বিশ্ব রেকর্ডধারী চারু যেন জীবনের সর্বোচ্চ সময়টা উপভোগ করতে পারে এটা আমাদের একান্তই প্রার্থনা। আর তাই সরকারের কাছে শিকড় অ্যাগ্রোর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে চারুকে তুলে দিতে চাই।
সৌজন্যে: সময় নিউজ টিভি