রোহিঙ্গা ফেরাতে জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি করছে সরকার

রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে সম্পৃক্ততার জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে সরকার একটি সমঝোতা স্মারক করতে যাচ্ছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এটি সইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা ফেরাতে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে জাতিসংঘকে রাখতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ঢাকার প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দেয় দেশটি। মিয়ানমার জাতিসংঘকে না জড়িয়ে রেডক্রিসেন্টকে রাখার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বাংলাদেশ জাতিসংঘের সঙ্গেই কাজ করবে বলে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোসহ পুরো প্রক্রিয়ায় যাতে ইউএনএইচসিআর যুক্ত থাকে, সে জন্যই এই সমঝোতা স্মারক সই হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের আগে সংস্থাটির সঙ্গে রোহিঙ্গাবিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানের জন্য গত সপ্তাহে একটি এমওইউ সই করেছে।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে পরিবারভিত্তিক তালিকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ। এ জন্য বাংলাদেশকে ফরম বা আবেদনপত্রের নমুনা দিয়েছে মিয়ানমার। ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে এমওইউ সইয়ের ফলে সরকারের কাছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সংগৃহীত রোহিঙ্গাদের তথ্যের সঙ্গে জাতিসংঘের সংস্থাটির সংগৃহীত পরিবারভিত্তিক তথ্যের সমন্বয় করে একটি সমন্বিত তথ্যভান্ডার তৈরি করা হবে।

রোহিঙ্গা ফেরত পাঠাতে কত সময় লাগতে পারে, এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিবারভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরির পর সেটি মিয়ানমারকে দেয়া হবে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দুই মাসের মধ্যে তা যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশকে দেবে।

মিয়ানমারের কাছ থেকে চূড়ান্ত তালিকা পাওয়ার এক মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা রয়েছে। অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি সই হওয়া মাঠপর্যায়ের চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমারের কাছে তালিকা পাঠানোর দিন থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে তাদের প্রত্যাবাসন হবে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এর আগে থেকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল।