লন্ডন কাঁদিয়ে ফিরছেন আনিসুল হক

যুক্তরাজ্যের লন্ডনের যে রিজেন্ট পার্ক মসজিদে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের প্রথম জানাজা হয়েছে। তাতে সমস্ত যুক্তরাজ্য থেকে দলমত নির্বিশেষে যোগ দিয়েছিলেন হাজারো বাংলাদেশী। তারা ভিড় করেছিলেন শেষবারের মত তাদের প্রিয় মেয়রকে এক নজর দেখার জন্য। লন্ডনের সে জানাজার বিস্তারিত এবং নিজের অনুভূতি ফেইসবুক পোস্টে তুলে ধরেছেন তার ছেলে নাভিদুল হক।

নাভিদ হকের পোস্ট থেকে অনুবাদ করে ঢাকার মেয়রের প্রতি লন্ডন প্রবাসীদের শ্রদ্ধা ও নাভিদুল হকের অনুভূতির কথা অনুবাদে তুলে ধরা হলো- “আমার বাবার একটি সুন্দর জানাজা হয়েছে। বন্ধু আত্মীয়স্বজন শুভানুধ্যায়ীসহ হাজার মানুষ তার জন্য দোয়া করতে সমস্ত যুক্তরাজ্য থেকে এসেছেন। আমি পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সবাই তাকে এক নজর দেখেতে চেয়েছেন। কিন্তু সময়ের বাধ্যবাধকতার কারণে আমরা দেখতে দিতে পারিনি। আমি এজন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমরা চেয়েছি যত দ্রুত সম্ভব আব্বু তার নিজের শহরে ফিরে যাক যেনো সবাই তার জন্য দোয়া করতে পারেন এবেং শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। অনেকেই কেঁদেছেন যেহেতু তারা আমার বাবাকে এক নজর দেখতে পারেননি। এদের অনেকেই ছিলেন যাদের কোনও দিন আবার আব্বু দেখেননি বা কথাও বলেননি। এক নারী আমার দিকে এগিয়ে এসে কথা বললেন। তিনি আগে কখনও আামার আব্বুর সাথে কথা বলেননি। তিনি অনেক দূর থেকে জানাজায় এসেছিলেন, কারণ তিনি ঢাকায় আমার বাবার কাজ দেখেছেন, তিনি বাবার জন্য দোয়া করতে এসেছিলেন। ঐ নারী খুব সাবলীলভাবে আমার কাছে জানতে চাইলেন-কে এখন কাজগুলো চালিয়ে যাবে? আমি যদি পারতাম তাহলে করতাম।”

নাভিদ হক লিখেছেন, “আমার বাবা নাগরিকদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন। তিনি যে-ই আসতেন তাকে সাগ্রহে সাহায্য করতেন। আমি এবং আমার পরিবার আব্বুর অনুপস্থিতিতে সবার সাথে থাকবো। আমরা আব্বুর সাথে ঢাকায় ফিরছি। আমি আবারও সকল সমর্থণের জন্য লন্ডনের সবার প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই শহর এবং এই শহরের মানুষ সর্বদা আমার এবং আমার পরিবারের অন্তরের ভেতর এক বড় জায়গা নিয়ে থাকবে।”

লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে মারা যান ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক। বেশ কিছুদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন।

শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তার মরদেহ বহনকারী বিমানটি ঢাকায় অবতরণ করবে। দুপুর সাড়ে ১২টায় পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-বান্ধবদের জন্য আনিসুল হককে তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে।

বিকেল ৩টায় তার মরদেহ বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সর্বসাধারণের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আর্মি স্টেডিয়াম উন্মুক্ত থাকবে। বিকেল ৪টায় আসরের নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিনই তাকে বনানী কবরস্থানের দাফন করা হবে।