শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে

শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী ও দরিদ্র মানুষকে। এ ছাড়া শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ।

গতকাল শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার মধ্যরাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা শুয়ে আছেন। কাঁথার ওপর পাতলা কম্বল গায়ে দিয়েও শীত নিবারণ করতে পারছেন না তিনি। একটু উষ্ণতা পেতে তাঁর কম্বল ঘেঁষে ঘুমিয়ে আছে একটি কুকুর।

নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দিলীপ কুমার রায় বলেন, শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। গড়ে প্রতিদিন শিশু ওয়ার্ডে ৫০ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছে। জেলা সদরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিরোদা বালা (৭০) বলেন, ‘খিব জার বায়, ঠান্ডাত মরি য়ায়ছি, কাও একটা কম্বলও দেয়ছে না। দিনে আইতে আগুন পোহে আছি।’

নীলফামারীতে কুয়াশার কারণে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের অবতরণ ও উড্ডয়ন বিঘ্নিত হয়। এ জেলা থেকে ট্রেনও চলাচল করে বিলম্বে। শীতজনিত রোগে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগে ২৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ টি এম আখতারুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে ৩৫ হাজার ৯৩৭টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার জাহাঙ্গীর আলম গতকাল জানান, এই হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ শিশু, ডায়রিয়ায় ২০ জন, অন্যান্য রোগে ৪৩ জন ভর্তি হয়েছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সীতারাম বিন বলেন, শীতের তীব্রতায় চা-বাগানে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন উপসর্গ বাড়ছে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গত তিন-চার দিন কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে হাসপাতালে ২০টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া ৬০টি শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। ডায়রিয়া, হাঁপানি, সিওপিডিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০-১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ২০-৩০ জন।