শেখ হাসিনার কারণেই উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবনমান পাল্টে গেছে : এনামুল হক শামীম

পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, একসময় উত্তরবঙ্গ মঙ্গা হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তিনবার সরকার গঠন করে এই সাড়ে ১৪ বছর ধরে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাঁর কারণেই উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবনমান পাল্টে গেছে। উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের মঙ্গাকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন।

আজ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৪ শ ৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

উপ-মন্ত্রী শামীম বলেন, আজ থেকে সাড়ে ১৪ বছর আগে এই অঞ্চলের চিত্র এমন ছিলো না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে এই অঞ্চলের যোগাযোগ, কৃষি ও অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। উত্তরাঞ্চল দেশের কৃষিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এই অঞ্চলে বাম্পার ফল হচ্ছে।

এর পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। এই প্রকল্পের ফলে খরার মধ্যেও এই অঞ্চলের কৃষকরা নিয়মিত প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে। এই প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলের ১.০৪ লাখ হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে ফসলে নিবিড়তা ২৩১% থেকে ২৬৮% এ উন্নীতকরনসহ প্রতিবছরে অতিরিক্ত প্রায় ১ লাখ মেট্টিক টন ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৫.২৭ লাখ মেট্টিক টন খাদ্যশষ্য উৎপাদন বৃদ্ধি (যার বর্তমান মোট বাজার মূল্য প্রায় ১০০০ কোটি টাকা),এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিপাবে (প্রায় ৮৬ লক্ষ জন-দিন)। প্রকল্প এলাকায় পরিবেশ, ভু-গর্ভস্থ পানির স্তরের অধিকতর উন্নতিকরন, জীব-বৈচিত্র রক্ষা ও প্রকল্প এলাকায় বসবাসরত (৩০ লাখের অধিক) জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন হবে।

উত্তর বঙ্গের মানুষ ভাগ্যবান, সে এলেঙ্গা থেকে ছয় লেন একপ্রেসওয়ে বগুড়া থেকে রংপুর, বুড়িমারী পঞ্চগড় যাবে। পোর্ট টু পোর্ট যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উপ-মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে স্থায়ী প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ অনেকাংশে জলাবদ্ধতা ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। উত্তরবঙ্গে ১৩ টি প্রকল্পে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে।আর এর সুফল কয়েক বছরের মধ্যে মিলবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প করা হচ্ছে। উপকূল অঞ্চলে প্রতিটি বাঁধ প্রশস্ত ও উঁচু করা হচ্ছে, বনায়ন করা হচ্ছে।

আর এসব স্থায়ী প্রকল্পে নদী খনন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলও বাড়ানো হয়েছে। কাজের গুনমান ঠিক রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। কাজের ব্যাপারে কোনো ধরনের গাফিলতি সহ্য করা হবে না।

তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে, সেখানে বিএনপি কুৎসা রটাচ্ছে। তারা নির্বাচনকে ভয় পায়। নিশ্চিত পরাজয়ের ভয়ে তারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন বিভোর। একারণে তারা ২০১৪ সালের মতো আবারও পেট্টোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করতে দ্বিধা করছে না। এব্যাপারে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।

এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আওয়ামী লীগ নেতা খাদেমুল ইসলাম সহ পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহ সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে তিনি ১৪৫২ কোটি টাকার ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতাধীন নীলফামারী সদর, সৈয়দপু রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া, রংপুর সদর, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ উপজেলা।নীলফামারী জেলার নীলফামারী সদর, সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ, ডিমলা,দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর, খানসামা, চিরিরবন্দর উপজেলা এবং জলঢাকা এলাকা পরিদর্শন করেন।