সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে : শিক্ষা উপমন্ত্রী

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন,সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোন ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। নির্বাচন করতে হলে আসুন, আলোচনায় বসুন। কূটনীতিক পাড়ায় পার্টি না করে আমাদের সঙ্গে বসে চা পান করতে করতে আলোচনা করেন, তাতে অনেক সওয়াব হবে। আমরা সবাইকে নিয়ে একসাথে নির্বাচন করতে চাই। আর কেউ যদি নির্বাচনে আসতে না চায়, না আসতে পারে।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শেখ রাসেলের জন্মদিন গাহি তারুণ্যের জয়গান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আপনারা যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে চান, তাহলে নির্বাচনে এসে ভোটের মাধ্যমে সংসদে গিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করুন। অন্যথায় সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের সংবিধান নবির সুন্নাহর অংশ। কারণ, নবির আদর্শে আমাদের সংবিধানে সবাইকে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে।

দেশের রাজনীতিতে কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের সুযোগ আমরাই করে দিয়েছি মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কোথাও কূটনীতিকরা সে দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ পান না। বিদেশি কূটনীতিকদের দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি আমরা। ফলে তারা দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পেয়েছেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জিয়াউর রহমানের আমলের বীজ আজকে গাছে পরিণত হয়েছে। এই আগাছা আমাদের পরিষ্কার করতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক মঞ্চে কেউ যদি ‘নারায়ে তাকবীর’ বলে হুঙ্কার দেয়, এরা দেখবেন নামাজের আশেপাশে থাকে না। এটা তাদের বংশগত অভ্যাস। তারা একদিকে নারায়ে তাকবীর হুঙ্কার দেয়, অন্যদিকে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বসে পার্টি করে, মদপান করে।

শেখ রাসেল প্রসঙ্গে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমার রাজনীতির প্রথম হাতেখড়ি হয় শেখ রাসেলের নামে। শেখ রাসেল নামটি একটি ঐতিহাসিক নাম। এ নাম কর্মী বাহিনীকে ঐতিহাসিক দ্রোহের থেকে উজ্জীবিত করেছে৷ রাসেল হত্যার বিচারের দাবি থেকে প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তির উত্থান৷

তিনি বলেন, একজন শিশু যে ১০ বছরের সে তো কোনো রাজনৈতিক সমীকরণের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তাকে কেন হত্যা করা হলো? সে জায়গা থেকেই কিন্তু ছাত্রলীগ, যুবলীগের সৃষ্টি হয়েছে। আমারও রাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশন হয়েছে ‘আমরা রাসেল’ নামের সংগঠনের মাধ্যমে। সেখানে আমরা তার জন্মদিন, শোক মিছিলে গিয়েছি। বাংলাদেশে স্বৈরাচারের পতন হতো না যদি সে সময়ে শেখ রাসেলের স্মৃতি নিয়ে পুনরায় উজ্জীবিত না হতো।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, বিএনপি জোট সরকারের আমলে দুর্নীতির আখড়া হয়েছিল দেশ। তারেক রহমানরা ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ চায়। আমরা সেই দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের বাংলাদেশ চাই না। তিল কে তাল বানিয়ে সংবাদমাধ্যমে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়। গুটি কয়েক নেতাকর্মীর ভুলের জন্য পুরো সংগঠনকে দায় দেওয়া উচিত না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, শেখ রাসেলের আদর্শ ততদিন থাকবে।

সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, যুগে যুগেই ষড়যন্ত্র হয়েছে দেশকে নিয়ে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্ট করা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র হবে। আসুন সবাই আমরা এর প্রতিবাদ করি। আমাদের নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন আমরা ভয় পাই না।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া ও মাওলানা এহসান উদ্দিন প্রমুখ।