সাংবাদিক নাদিম হত্যায় আটক চেয়ারম্যান বাবু, তার ছেলেসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর মামলা হয়েছে।

এজাহারে আসামি হিসেবে উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ওরফে বাবু, তার ছেলেসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে।

সাংবাদিক গোলাম রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে শনিবার বেলা একটার দিকে বকশীগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে। তাকে শনিবার ভোরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে আটক করেছে র‌্যাব।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার সিরাজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে বাবুর ছেলে ফাহিম রহমান ওরফে রিফাতকে।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী এখন মামলা করা হয়েছে। মামলায় চেয়ারম্যান বাবুকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ ২২ জনের নাম এবং আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।

বাবু সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাকে শুক্রবার রাতে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। তার নির্দেশেই সাংবাদিক গোলাম রব্বানিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজন ও সহকর্মীদের। পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।

ছাত্রজীবনে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ করলেও পরে বিএনপিতে ভিড়েছিলেন বাবু। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ভোল পাল্টে রাজনীতি ছেড়ে নিরপেক্ষতার ভান ধরেন। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগে যুক্ত হন বাবু। আওয়ামী লীগে ভিড়েই সাধুরপাড়া ইউপি নির্বাচনে অংশ নেন।

নির্বাচনে ফেল করার পর ২০১৪ সালে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেয়। ২০১৬ ও ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হয় বাবু।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার পাটহাটি মোড় দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সাংবাদিক নাদিম। ঘটনার সময় চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, আর চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাত সাংবাদিক নাদিমকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এ সময় সেখানে ২০-২৫ জন উপস্থিত ছিলেন। পরে চিকিৎসাধীন নাদিম মারা যান। এ ঘটনার বর্ণনা দেন নাদিমের সহকর্মী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক আল মুজাহিদ।