সাতক্ষীরায় নতুন ও নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য নিয়ে বাণিজ্য মেলা

নতুন ও নারী উদ্যোক্তাদের তৈরি বাহারি ও ব্যতিক্রমী সব পণ্য নিয়ে সাতক্ষীরায় শুরু হয়েছে বাণিজ্য মেলা। সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত ‘শিল্প ও বাণিজ্য মেলা’ নামে মাসব্যাপী সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) শুরু হয় এই মেলা।

সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত অন্যান্য মেলার সঙ্গে এই পার্থক্য হলো এখানে শুধু শিল্প উদ্যোক্তাদের দেশে তৈরি পণ্য স্থান পেয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ব্যসায়ীদের সমন্বয়ে সাড়া জাগানো ৭২টি স্টল স্থান পেয়েছে এই মেলায়। এমনটাই জানালেন মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে দায়িত্বে থাকা বেনারসি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট।

জানতে চাইলে বেনারসি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সমন্বয়ক ওমর ফারুক সুমন বলেন, ‘অন্য সব মেলার মতো এটি নয়। স্টল ঘুরলেই এটা বোঝা যাবে। আমাদের দেশের শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, নারী উদ্যোক্তাদের নিজেদের পণ্য বিক্রি করে ভালো সাড়া ফেলেছেন। আমাদের উদ্যোক্তারা যাতে একটি প্লাটফরমে তাদের সব পণ্য নিয়ে গ্রাহকদের কাছে উপস্থিত হন তার জন্যই এ আয়োজন।’

মেলার পঞ্চম দিন মঙ্গলবার (১৩ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই এসেছেন মেলায় পছন্দের জিনিস কিনতে। মেলায় প্লাস্টিক পণ্য, অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি (ক্রোকারিজ), ইমিটেশনের গয়না, কসমেটিকসের স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। এছাড়া প্রথম দিন থেকেই ভাল বিক্রি হচ্ছে। আবার কাঠ ও প্লাইউডের আসবাব ও ইলেকট্রনিক পণ্যের স্টলগুলোও ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্র।

মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ায় ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছেন। মেলা থেকে গৃহস্থালি পণ্য কিনছিলেন মুন্নি খাতুন বলেন। তিনি , প্রথম দিন মেলায় এসেছি। কারণ প্রথম দিকে ভিড় কম থাকে। বাণিজ্য মেলায় কম মূল্যে ও ভাল মানের গৃহস্থালি পণ্য পাওয়া যায়।

গৃহস্থালি পণ্য বিক্রেতা অতিয়ার রহমান জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে দুপুরে দোকান চালু করেছি। প্রতিবারই একটি স্টল দেয়ার চেষ্টা করি। কারণ মেলায় বিক্রি ভাল হয়। ওই বিক্রেতা বলেন, প্রথমদিনে বিক্রি তেমন না বাড়লেও ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। তবে দিন বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বিক্রি বাড়বে বলেও জানান ওই বিক্রেতা।

মঙ্গলবার ( ১৩ জুন) বিকালে বাণিজ্য মেলায় ঘুরে দেখা যায়, এবারে সবচেয়ে বেশি আর্কষণ হচ্ছে ইমিটেশনের গয়না, কসমেটিকস, শাড়ি, থ্রি-পিস ও জুতার স্টলগুলো। এই স্টলগুলোতে নারী ও বাচ্চাদের ক্রেতাদের সংখ্যা বেশি। মেলায় এসেছে বাহারি রঙের বিভিন্ন দেশীয় শাড়ি, থ্রি-পীস, কসমেটিকস এ ইমিটেশনের গয়না। এছাড়াও শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে ১০ প্রকার রাইস।

মেলায় ইমিটেশনের গয়না কিনছিলেন গীতা রানী। তিনি বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন দেশের কসমেটিকস, ইমিটেশনের গয়না পাওয়া যায়। তা ব্যতিক্রম, দৃষ্টিনন্দন ও মানের দিক দিয়ে সেরা। তিনি বলেন, ইমিটেশনের গয়নাগুলো শাড়ি বা থ্রি-পীসের সাথে মানসই করে পড়লে অনেক বেশি ব্যক্তিত্ববান মনে হয়। মেলায় বাবা-মায়ের হাত ধরে এসেছেন অনেক শিশু। মেলায় শিশুদের জন্য থাকছে নজরকাড়া ডিজাইনেরা পোশাক, জুতা ও খেলাধুলার সুযোগ ।

৫ বছরের মেয়ে তাহার জন্য খেলনা কিনছিলেন মা আমেনা বেগম। তিনি বলেন, শিশুদের সাতক্ষীরা লেকভিউ ছাড়া বিনোদনের তেমন কোনো জায়গা নেই। তাই বাণিজ্য মেলায় বাচ্চাদের ঘুরতে নিয়ে এসেছি। এছাড়া এখানে শিশু পার্কের ব্যবস্থা রয়েছে। এই মেলা শিশুদের জন্য বিনোদনও বটে।

সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু বলেন’ আমরা দীর্ঘদিন পরে এমন একটা মেলার আয়োজন করতে পেরে খুবই আনন্দিত। বিশেষ করে শিল্প উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন, তাদের পণ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মেলায় জীবনধারণের জন্য মোটামুটি যেসব পণ্য প্রয়োজন, যেমন খাবার, পোশাক, গয়না, হোম ডেকোর বা ঘর সাজানোর সামগ্রী সবই থাকছে। আছে ঘরে তৈরি খাবারের সব আয়োজনও। সব শ্রেণির মানুষকে লক্ষ্য রেখেই মেলাটির আয়োজন করা হয়েছে।