সিরিয়ায় ভূমিকম্পের সুযোগে জেল থেকে পালিয়েছে ২০ কয়েদি

সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পের সুযোগ নিয়ে সিরিয়ায় জেল থেকে পালিয়েছে অন্তত ২০ কয়েদি। তারা সবাই আইএস জঙ্গি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি’র বরাতে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

কারাগার সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, তুরস্ক সীমান্তবর্তী সিরীয় শহর রাজোয় অবস্থিত মিলিটারি পুলিশ কারাগারে প্রায় দুই হাজার কয়েদি রয়েছে। এদের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি। কারাগারটিতে কুর্দি নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীগুলোর বহু যোদ্ধাও রয়েছে।

রাজো কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভূমিকম্পের আঘাতে রাজো ক্ষতিগ্রস্ত হলে কয়েদিরা বিদ্রোহ শুরু করে এবং কারাগারের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সেখান থেকে প্রায় ২০ কয়েদি পালিয়ে গেছে… ধারণা করা হচ্ছে তারা (আইএস) জঙ্গি।

এর আগে, স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরের দিকে তুরস্ক-সিরিয়ায় সীমান্ত অঞ্চলে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। গত এক শতাব্দীর মধ্যে ওই অঞ্চলে আঘাত হানা ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম শক্তিশালী বলে জানানো হয়েছে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস থেকে ৬৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (আফাদ) তথ্যমতে, দেশটিতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৯২১ জনে পৌঁছেছে।

আর দামেস্ক সরকার ও উদ্ধারকর্মীদের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সিরিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৪৪৪ জন। আহত আরও কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে গুরুতর অবস্থা অনেকের।

ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য জাতিসংঘের সব সদস্য দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সিরিয়া। দেশটির ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলা সরকার ও বিরোধী শক্তি নিয়ন্ত্রিত দুটি অংশে বিভক্ত।

জাতিসংঘে সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত বাসাম সাব্বাগ সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে সিরিয়াকে যথাসাধ্য সাহায্য করবেন তারা। সাহায্যের অনুরোধ জানিয়ে সিরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লেখা একটি চিঠি তিনি আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।

বার্তা সংস্থা এপির সাংবাদিক সারাহ এল দিব জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের আঘাতে সিরিয়ায় অন্তত ২৪৪টি ভবন ধসে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৩২৫টি।