সীমান্তের রোহিঙ্গা শিবিরে গুলি-বিস্ফোরণ, নিহত ২
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম ও তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে গত তিন দিনে গুলি ও বিস্ফোরণে দুই ব্যক্তি নিহত ও এক নারী আহত হয়েছেন। সোমবার বিস্ফোরণে আহত নারীকে রেড ক্রিসেন্টের অ্যাম্বুলেন্সে কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আজও এ এলাকায় রোহিঙ্গারা দলে দলে ছুটে এসেছে। ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মাঝেমধ্যে গুলির শব্দ শোনা ও কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে। এতে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
বিজিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, সীমান্তে বাংলাদেশের অংশে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে ২৫ আগস্টের পর থেকে যোগাযোগ না থাকায় তাঁদের অংশে কী অবস্থা জানা যাচ্ছে না।
ঘুনধুম ও তুমব্রু এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অংশে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা দম্পতিকে গত শনিবার হত্যা করা হয়েছে। তুমব্রু বাজারের চৌধুরী আবু তাহের বলেছেন, জাকের উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী আয়েশা বেগম আশ্রয় তাঁবু থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ভেতরে গিয়েছিলেন। সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কিছু সহযোগী জাকের উল্লাহকে গুলিতে ও আয়েশাকে ছুরির আঘাতে হত্যা করে। তাঁদের দুই বছরের এক ছেলে রয়েছে।
তুমব্রু বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদুল হক বলেছেন, সোমবার বেলা পৌনে তিনটায় তুমব্রু বাজারের বিপরীতে সীমান্তের মিয়ানমারের অংশের কাঁটাতারের বেড়াসংলগ্ন এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে ফাতেমা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর দুই পা উড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্থলমাইন-জাতীয় বিস্ফোরক মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল। আহত ফাতেমাকে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে করে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের হাসপাতালে নিয়ে যান। এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় তুমব্রু বাজারের দিকে লক্ষ্য করে মিয়ানমারের বাহিনী চারটি গুলি ছুড়েছে। বাজারের আবদুল করিমের দোকানে একটি গুলি আঘাত করে। গুলির খোসাটিও পাওয়া গেছে।
ঘুনধুম ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, কখন কী হয়, এ রকম অবস্থায় তাঁরা এক ধরনের আতঙ্কে রয়েছেন। সীমান্তে ওপারে মাঝেমধ্যে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের কালো ধোঁয়া ও হেলিকপ্টার ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে।
চাকঢালা ও আশারতলির সীমান্তে ছয়টি পয়েন্টে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বড় শনখোলা, ফুলতলি ও সাপমারাঝিরি—এই তিন এলাকায় সরিয়ে আনা হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা আসা কমে গেছে বলে সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন। তবে ঘুনধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলি, গর্জনবনিয়া ও ভালুক্যাপাড়া পয়েন্টে দলে দলে রোহিঙ্গা আসা অব্যাহত রয়েছে বলে সেখানকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
বিজিবি কক্সবাজারের ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান সীমান্তের ওপারে গত শনিবার রোহিঙ্গা দম্পতির মৃত্যু ও সোমবার বিস্ফোরণে এক নারী আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি বাংলাদেশের অংশে শান্ত রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন