সীমান্তে হত্যা ও আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রতীকী লাশের মিছিল

সীমান্তে হত্যা ও আগ্রাসন বন্ধের দাবীতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রতীকী লাশের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় উপজেলার তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা বাজারের তেঁতুল তলায় মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় হানিফ বাংলাদেশীর নেতৃত্বে লাশের মিছিল এসেছে। এই মিছিল বাংলাদেশের সাথে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত আছে এমন সব জেলা ও উপজেলা প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ জানাবে।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- গণতন্ত্রের রাজা এন ইউ আহম্মেদ, সৌরভ হোসেন বেলাল, আরিফসহ স্থানীয় অনেকে। এ সময় অনেককেই সংহতি জানাতে দেখা গেছে। জানা যায়, হানিফ বাংলাদেশীর এই কর্মসূচী যশোরের বেনাপোল উপজেলায় গিয়ে শেষ হবে। ইতোমধ্যে তিনি সীমান্ত রয়েছে এমন ২০টি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছেন।

কর্মসূচি সম্পর্কে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুইটি দেশ ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের উপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত সব সময় সীমান্তে নিরিহ মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের একজন বিজিবি সদস্যকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গুলি করে হত্যা করেছে।

গত ৪ মাসে ভারত সীমান্তে ২১জন বাংলাদেশী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সংগ্রহ করা তথ্যানুযায়ী ২০১০ সাল থেকে প্রায় ১২৭৬ জন বাংলাদেশীকে বিএসএফ হত্যা করেছে। ১১৮৩ জন আহত হয়েছেন। আরেক প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার তাদের ১২ লাখ রহিঙ্গাকে অত্যাচার করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারী মিয়ানমারের আভ্যন্তরিন যুদ্ধে মটারসেলে দুজন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন। সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে আমি প্রতিকী লাশ কাঁধে নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম পদযাত্রা করেছি।

হানিফ বাংলাদেশী আরো বলেন, বাংলদেশের জনগণ সব সময় প্রতিবেশী ও বন্ধু দেশগুলোর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়।কিন্তু প্রতিবেশী দেশ দুইটি বাংলাদেশের সাথে বৈরি আচরণ করে। সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার পরে বলা হয় এরা গরু চোর চোরাকারবারি। হতে পারে এরা গরু চোর চোরাকারবারি এদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক গুলি করে হত্যা করবে কেন? ভারত ও মিয়ানমার যদি তাদের দেশের পাচারকারিদের দমন করে তাহলে বাংলাদেশের পাচারকারিরা এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যে দলই এসেছে সে দলই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষের আর্ত মর্যাদা বিসর্জন দিয়ে বিদেশীদের দ্বারস্থ হয়েছেন। শাসকদের এই দুর্বল নতজানুর কারনে ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের উপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশী অন্য দেশ গুলো বাংলাদেশের উপর তাঁবেদারী করার সাহস পাচ্ছে।

৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশের মানুষ কখনও কোন দেশের দাদাগিরি মেনে নেয়নি নতুন প্রজন্মও কোন দেশের আগ্রাসন মেনে নেবেনা। বাংলাদেশের মানুষ আর্ত মর্যাদা নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উচ্ছু করে বাঁচতে চায়।

এই কর্মসূচিতে আমারা দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। দেশের সচেতন মানুষদের এই কর্মসূচী অংশ গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি। যেদিন যে জেলা উপজেলায় এই মিছিল যাবে সেখানে যেকোনো দল, সংগঠনকে আমাদের সাথে সংহতি জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।