স্বীকৃতি পেলেও নিজ পরিচয়ে ভোট দিতে পারছেন না হিজড়ারা

সরকার পাঁচ বছর আগে হিজড়াদের স্বীকৃতি দিলেও এখন পর্যন্ত তারা নিজ পরিচয়ে ভোটার হতে পারছেন না। ভোটার হতে গেলে তাদেরকে পুরুষ বা নারী পরিচয়ে ভোটার হতে হয়। নির্বাচন কমিশন (ইসি) হিজড়া পরিচয়ে ভোটার করার উদ্যোগ নিয়েছে।

যেহেতু আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবছর ভোটারদের তথ্য হালনাগাদ করা হবে না, তাই আগামী সংসদ নির্বাচনে হিজড়ারা নিজ পরিচয়ে ভোট দিতে পারছেন না। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

হিজড়া পরিচয়ে ভোটার করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে ১৮ জানুয়ারি ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, এতদিন যে হিজড়া পুরুষদের পোশাক পরে তাকে পুরুষ এবং যে মহিলাদের পোশাক পরে তাকে মহিলা হিসেবে ভোটার করা হয়েছে। এখন থেকে তারা হিজড়া হিসেবে ভোটার হতে পারবেন। এটা কমিশনে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

হিজড়াদের ভোটার করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসির সিস্টেম ম্যানেজার মো. রফিকুল হক বলেন, এ সংক্রান্ত সফটওয়্যার উপজেলা নির্বাচন অফিস পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে।

জানতে চাইলে ইসির সহকারি সচিব মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, হিজড়া পরিচয়ে ভোটার করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন শুধু নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন ফরমে ‘হিজড়া’ লিঙ্গটি যোগ করতে হবে। এটা যোগ করা হলেই নিজ পরিচয়ে হিজড়ারা ভোটার হতে পারবেন।

সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে হিজড়া জনগোষ্ঠীককে স্বীকৃতি দেয়া হলেও ভোটার তালিকা আইন ও বিধিমালায় বিষয়টি না থাকায় এতোদিন এটি করা যায়নি। তাই কমিশন ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ ও ভোটার তালিকা বিধিমালা-২০১২ সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়।

২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মন্ত্রিসভায় হিজড়াদের স্বীকৃতি বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সমাজকল্যাণ মন্ত্রলায়ের সহকারী সচিব মো. মুখলেছুর রহমান খান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকার বাংলাদেশের হিজড়া জনগোষ্ঠীকে হিজড়া লিঙ্গ ( hijra) হিসেবে চিহ্নিত করিয়া স্বীকৃতি প্রদান করিল।’

এর আগে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৪ সালে ভোটার তালিকা নিবন্ধনের খসড়া ফরমে হিজড়া লিঙ্গটি যোগ করেছিলেন। কিন্তু ভোটার তালিকা আইন ও বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায়, সেটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারেননি তারা। এখন পর্যন্ত কেউ ভোটার হতে চাইলে তাকে নারী বা পুরুষ লিঙ্গ বেছে নিতে হয়।