হেফাজতের ইটপাটকেলে ভাঙল সোনার বাংলার ১৩৭ গ্লাস

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করার সময় কর্মী নিহতের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। হরতাল চলাকালে হেফাজত কর্মীদের ইটপাটকেলের আঘাতে আন্তঃনগর ট্রেন সোনার বাংলার ১৩৭টি গ্লাস ভেঙে গেছে। এছাড়া হরতাল সমর্থকরা ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ১৪টি বগিও ভাঙচুর করে।

রবিবার সকাল নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আউটার সিগন্যালের কাছে হেফাজতের সমর্থকদের হামলার কবলে পড়ে বিলাসবহুল ট্রেনটি। হামলার পর ট্রেনটিকে ভৈরবে নেয়া হয়েছে। মেরামত করতে ট্রেনটি চট্টগ্রামের ওয়ার্কশপে নেওয়া হবে।

সোনার বাংলা ট্রেনের কয়েকজন যাত্রী জানান, ট্রেনে ৩৫০ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে পৌঁছলে হরতালকারীরা বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। তখন আমরা আত্মরক্ষার্থে ট্রেনে মেঝেতে শুয়ে পড়ি। ইটের আঘাতে ট্রেনের আট যাত্রী আহত হন। অবস্থা বেগতিক দেখে চালক তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেনটিকে ভৈরব স্টেশনে নিয়ে যান।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি তেলবাহী ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ইঞ্জিনে ইটপাটকেল ছুঁড়লে ট্রেনটির চালক আনোয়ার হোসেন ও সহকারী ট্রেন চালক সবুজ হাসান আহত হন। বর্তমানে ট্রেনগুলো ভৈরব স্টেশনে আটক পড়েছে।

ট্রেনের চালক আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আউটার সিগন্যালের কাছে পৌঁছামাত্রই হরতাল সমর্থকরা সেটিতে হামলা চালায়। অবস্থা বেগতিক দেখে তাৎক্ষণিক ট্রেনটিকে ভৈরবে নিয়ে আসি।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদাউস আহমেদ জানান, বর্তমানে ভৈরব স্টেশনের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। হামলায় তেলবাহী ও আন্তঃনগর সোনারবাংলা ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে আনা হয়।

ভৈরব স্টেশন মাস্টার নূর নবী জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট রুটের বিভিন্ন ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে আছে। তবে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ-ঢাকা রুটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) মিয়া জাহান বলেন, বর্তমানে ট্রেনগুলো ভৈরব রেলস্টেশনে রয়েছে। ট্রেনগুলোকে চট্টগ্রামের ওয়ার্কশপে নিয়ে মেরামত করতে হবে। ট্রেনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে শুনেছি সোনার বাংলার ১৩৭টি গ্লাস ভেঙেছে।