৪৭ কিলোমিটার রেলপথ যেন মৃত্যুপুরী

জয়পুরহাটের ২৮টি রেল ক্রসিংয়ের অর্ধেকই অরক্ষিত। ফলে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে জেলার ৪৭ কিলোমিটার রেলপথের প্রায় পুরোটা। এসব ক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে শতশত যানবাহন। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা।

জয়পুরহাট জেলায় অরক্ষিত রেলক্রসিং আছে অন্তত ১৪টি। এসব ক্রসিংয়ে দায়সারা একটি সাইনবোর্ড দেয়া ছাড়া কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি রেলওয়ে প্রশাসন। ফলে গত ১৪ বছরে শুধু বড় ৩টি দুর্ঘটনাতেই প্রাণ গেছে ৬১ জনের। আর ছোট ছোট দুর্ঘটনায় মারা গেছেন আরো অর্ধশতাধিক মানুষ। এসব রেলক্রসিং নিরাপদ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।

জেলায় রেলক্রসিংয়ে বড় দুর্ঘটনায় নিহতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৬ সালের ১১ জুলাই বাস-ট্রেন সংঘর্ষে ৪০ জন, ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ট্রাক-ট্রেন সংঘর্ষে ৯ জন, ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাস-ট্রেন সংঘর্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন।

এক বাস ড্রাইভার জানান, এখান দিয়ে আসা-যাওয়া করি, কিন্তু কখন যে ট্রেন আসে সেটাই জানি না। তাই জীবনে ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হয়।

আর স্থানীয় একজন জানান, রেলের গেট না থাকার কারণে প্রায় সময়ই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। কর্তৃপক্ষের এখন রেলের গেট তৈরি করা উচিত। তা না হলে দুর্ঘটনা আরো বাড়বে।

দুর্ঘটনা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা না হলে রেলপথে যাতায়াতে আস্থা হারানোর শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এ বিষয়ে জয়পুরহাট সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি তিতাস মোস্তফা জানান, রেল ভ্রমণে যেমন মানুষের আস্থা ফিরে আসছে। তেমনি রেল দুর্ঘটনায় ফলেও রেলের প্রতি মানুষের অনাস্থা তৈরি হতে পারে।

তবে রেলওয়ে বলছে, দুর্ঘটনা এড়াতে শিগগিরই ক্রসিংগুলোতে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, এলজিইডি ও পৌরসভা অনেক ক্ষেত্রে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় না করেই অবৈধভাবে রোড ক্রস করিয়ে থাকে। যার কারণে রেলের পক্ষে এগুলো মনিটরিং করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও এখন আমরা চিন্তা করছি, ম্যানুয়ালের সঙ্গে অটোমেশন পদ্ধতি যুক্ত করা যায় কি না।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী বগুড়ার সান্তাহার থেকে দিনাজপুরের বিরামপুর পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার রেলপথে ১০৯টি রেলক্রসিং আছে।