কাজের মেয়ের প্রাণ বাঁচালেন অভিনেত্রী মৌসুমী
জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। অভিনয় করছেন নিয়মিত। সেই ধারাবাহিকতায় গত ৬ জুলাই উত্তরার একটি শুটিং বাড়িতে নাটকের শুটিংয়ে ব্যস্ত তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই পাশের বাড়ির একটি বাচ্চা মেয়ের কণ্ঠে করুণ সুর শুনতে পান। মানে তাকে কেউ মারছে। সচারচর শুটিং করার সময় সব কিছু নিঃশব্দ থাকে। কিন্তু বাচ্চা মেয়েটির কান্নার কারণে শুটিং করা আর সম্ভব হচ্ছিল না।
প্রথমে বিষয়টি এতটা সিরিয়াস ছিল না। কিন্তু সেই বাচ্চার কান্না আর থামছে না। আর এটা দেখতেই বারান্দায় গেলেন মৌসুমী হামিদ। গিয়ে দেখতে পেলেন একটি বারান্দায় একটি মেয়ে করুণ চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। চোখে তার পানি। মৌসুমী বারান্দায় যাওয়াতে বাচ্চা মেয়েটিকে মারা বন্ধ করেন মধ্যবয়সী এক মহিলা। মৌসুমী মহিলাকে জিজ্ঞেস করাতে সেই মহিলা মৌসুমীকে বললেন, ‘না কই কেউ তো কাঁদে না। এখানে
তো কাউকে মারা হচ্ছে না। এটা বলাতেই মৌসুমী হামিদের সন্দেহ হয়। পরে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মৌসুমী জিজ্ঞেস করেন, ‘কেন মারছে তাকে?’ তখন মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বলে ‘আমার বাবা-মা কেউ নাই। তাই আমি এখানে থাকি। আমাকে প্রায়ই মারে।’
এই কথা শুনে মৌসুমী তখন ওই মহিলার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ তর্ক করেন। তাও আবার ফেসবুক লাইভে। মহিলা তখনও জানেন না ঘটনা কোন দিকে মোড় নিচ্চে। ভিডিওটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বের বাঙালিদের কাছে। তারপরও মহিলা অস্বীকার করেন কখনও তিনি তার কাজের মেয়েটির গায়ে হাত তুলেননি। এভাবে কিছুক্ষণ লাইভে থাকার পর সেদিন আর কিছুই হয়নি। মৌসুমী শুটিং শেষ করে বাসায় চলে আসেন।
আজ ৭ জুলাই মৌসুমীর শুটিং সেটে হাজির হন তার এক ভক্ত। তিনি এসে ফেসবুক লাইভের ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলেন। তারপর উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে আসে এক গাড়ি পুলিশ। সেই কাজের মেয়ের বাসায় পুলিশসহ মৌসুমী যান। সেখানে গিয়ে তখন কাজের মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হয়। কিন্তু মেয়েটি ভয়ে কিছুই বলতে পারে না এবং মারের ব্যাপারটি অস্বীকার করে। তাতে পুলিশ কিছুই করতে পারেনি। কিন্তু ঘটনা সবাই বুঝতে পারে। যে সত্যি মেয়েটিকে নির্যাতন করা হয়েছিল। কিন্তু বাদী অস্বীকার করাতে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারে না। তাই কাগজে লিখিত রেখে দেয় পুলিশ। যাতে লেখা থাকে এই কাজের মেয়ের যাতে কখনও কোন ক্ষতি না হয়। এমনকি কোন অত্যাচার করা না হয়।
পুলিশসহ পরবর্তীতে মৌসুমী হামিদ চলে আসেন শুটিং সেটে। এস আই সবুজকে আর সামসুলকে ধন্যবাদ দেন মৌসুমী হামিদ। পুলিশও তার পক্ষ থেকে বলেন, আপনাকেও ধন্যবাদ। কাজের মেয়েটির প্রাণ বাঁচিয়েছেন। মেয়েটি অস্বীকার করাতে কিছু হলো না তবে ভবিষ্যতের জন্য সাবধান হয়ে যাবে তারা।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন