ইন্দিরা গান্ধীর যত প্রেম!
ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতিতে এক শক্তিশালী রাজনীতিবিদ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনেও রয়েছে তাঁর অসামান্য অবদান। ভারতের প্রথম এবং আজ পর্যন্ত একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরুর মেয়ে ইন্দিরা গান্ধী।
তবে ইন্দিরার গান্ধীর রাজনীতিবিদ জীবনে রয়েছে বেশ কিছু গোপন অধ্যায়। তরুণী এবং যুবতী বয়সে, এমনকি বিয়ের পরেও একাধিক প্রেমে মজেছিলেন এই রাজনীতিবিদ।
১৯৩৬ সালে ইন্দিরার মা কমলা নেহরু মারা যাওয়ার পর যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে যান ইন্দিরা গান্ধী। সেখানে তাঁর সঙ্গে প্রেম হয় ফিরোজ গান্ধীর। ১৯৪২ সালে তিনি বিয়ে করেন ফিরোজ গান্ধীকে।
অবশ্য এর আগে ১৯৩০ সালে ইন্দিরা গান্ধীকে একবার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল ফিরোজ। তখন ইন্দিরার বয়স কম থাকায় তাঁর পরিবার রাজি হয়নি। ফিরোজ গান্ধী ছিলেন ভারতের পারসি সম্প্রদায়ের সদস্য। এ কারণে এ বিয়ে মেনে নিতে চাননি তাঁর বাবা জওহর লাল নেহরু। বিয়েতে আপত্তি ছিল মহাত্মা গান্ধীরও। ফিরোজ-ইন্দিরার প্রেমের কাছে কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি।
তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের এ বিয়ে সুখকর হয়নি। বিবাহবিচ্ছেদ না ঘটলেও ১৯৫০ সালের পর আর একসঙ্গে থাকা হয়নি ফিরোজ-ইন্দিরার।
ফিরোজ গান্ধীর সঙ্গে এ সম্পর্কচ্ছেদের আগেই একাধিক প্রেমে মজেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা শেষ না করেই ভারতে ফিরে আসেন তিনি। তাঁর বাবা তাঁকে ভর্তি করিয়ে দেন রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে। এখানে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এক জার্মান শিক্ষকের। ওই শিক্ষক তাঁকে জার্মান ভাষা শেখাতেন।
১৯৫০ সালে ফিরোজ গান্ধীর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের পর থেকে ইন্দিরা তাঁর বাবার একান্ত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন তাঁদের ‘তিন মূর্তি ভবনে’। এখানে এসে তিনি প্রেমে পড়েন তাঁর বাবার সচিব এম ও মাথাইয়ের। মাথাইয়ের সঙ্গে তাঁর প্রেম চলে একটানা প্রায় ১২ বছর। এমনকি এ সময় একবার গর্ভবতীও হয়েছিলেন ইন্দিরা। তবে শেষ পর্যন্ত ইন্দিরার যোগ শিক্ষক ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারীর কাছে হেরে যান মাথাই।
ইন্দিরা নতুন করে প্রেমে পড়েন ধীরেন্দ্রর। এরপর ইন্দিরার জীবনে আসে দীনেশ সিং। তিনি প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী ভবনে এসে আড্ডা দিতেন ইন্দিরার সঙ্গে। তার পর থেকেই শুরু হয় প্রেম। দীনেশ সিং ছিলেন জওহর লাল নেহরুর মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর মধ্যে ফিরোজ গান্ধীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালেই আরো একজনের সঙ্গে প্রেম ছিল ইন্দিরার। তাঁর নাম মোহাম্মদ ইউনুস। কে এন রাও তাঁর ‘নেহরু ডায়নাস্টি’ বইতে লিখেছেন, ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী মূলত ইন্দিরা-ইউনুসের ছেলে। কারণ সঞ্জয় মানেকাকে বিয়ে করায় ইউনুস ছিলেন ক্ষুব্ধ। একজন শিখ মেয়ের সঙ্গে নিজের ছেলের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি তিনি। ঘটনাটি মোহাম্মদ ইউনুসের লেখা ‘পারসন, প্যাশন অ্যান্ড পলিটিকস’ বইতেও পাওয়া যায়।
কিন্তু এতকিছুর পরও ইন্দিরার রাজনৈতিক জীবনে কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ভারতের রাজনীতিতে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন