ব্যাংক জালিয়াতিতে জড়িত অধিকাংশ কর্মকর্তা
মোবাইল ব্যাংকিং ও এটিএম সেবায় বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে। অনলাইন ব্যাংকিং জালিয়াতির ঘটনায় প্রায় ৬৭ শতাংশের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যাংকাররা জড়িত। এমন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইবিএম।
বৃহস্পতিবার(১৬ নভেম্বর) গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম)। সেই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকের অনলাইন জালিয়াতির ঘটনাগুলো আইটি বিশেষজ্ঞ ও আইটি ফার্মের সঙ্গে যোগসাজসে ব্যাংকাররা এ জালিয়াতি করে থাকেন। এরমধ্যে ৪০ শতাংশ জালিয়াতি ব্যাংক কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞরা ঘটান।
রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘অলটারনেটিভ ডেলিভারি চ্যানেল: অপরচুনিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অব দ্য নিউ ব্যাংকিং ইনভায়রমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় এই প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। ব্যাংকিং খাতের জালিয়াতির ৫০টি ঘটনা বিশ্লেষণ করে এই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিআইবিএম।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু ব্যাংক কর্মকর্তারা ১৮ শতাংশ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ৯ শতাংশ জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকার ও আইটি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজস রয়েছে। কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান আলমের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং জালিয়াতির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে এটিএম ও প্লাস্টিক কার্ডের মাধ্যমে। প্রায় ৪৩ শতাংশ ঘটনা প্রযুক্তি ভিত্তিক।
জালিয়াতি ঘটনার মধ্যে ২৫ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘটছে। অনলাইন চেক ক্লিয়ারিং (এসপিএস) ও ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রন্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে ঘটছে ১৫ শতাংশ, ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে ১২ শতাংশ, ব্যাংকিং সফটওয়ায়ের মাধ্যমে ৩ শতাংশ ও সুইফটের মাধ্যমে ২ শতাংশ জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, অনলাইনভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু হওয়ায় ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয় অনেকাংশে কমে গেছে। মাত্র ২ লাখ জনবল দিয়ে অর্ধশতাধিক ব্যাংকের কয়েক হাজার শাখা পরিচালন করছে। অনলাইন ব্যাংকিং চালু না হলে এত বেশি শাখা পরিচালনায় ১০ লাখেরও বেশি জনবল প্রয়োজন হতো।
তিনি বলেন, বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থা খুবই ভালো। কিন্তু এর অপব্যবহার হলে আর্থিক খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আনা হচ্ছে। ব্যাংকারদের প্রযুক্তির অপব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে, যেন আর্থিক খাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নিয়ে মতামত দেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রেসিডেন্ট মো. আরফান আলী বলেন প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন