অহেতুক সিজারিয়ান প্রসব হচ্ছে দেশে
দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সিজারিয়ান প্রসবের হার ৩১ শতাংশ। সারা দেশে যত সিজারিয়ান প্রসব হয় তার মধ্যে ৮৩ শতাংশই হয় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। অথচ বিশ্ব সংস্থার মতে এ হার সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাটাই স্বাভাবিক চিত্র।
বাংলাদেশ মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ-২০১৬ এ তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার(২২ নভেম্বর) রাজধানীর রেডিসন ব্লু’তে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জরিপের এ তথ্য উপস্থান করা হয়।
জরিপে বলা হয়, দেশে সিজারিয়ান প্রসবের হার আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে এ হার ছিল ১২ শতাংশ, ২০১৬ তে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশে। এর মধ্যে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ৮৩ শতাংশ, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩৫ শতাংশ এবং এনজিও’র হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ৩৯ শতাংশ মা সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কোনো দেশের মোট সিরাজিয়ান প্রসবের হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে রাখার উচিৎ। তবে জরিপে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে এ হার দিগুণেরও বেশি। প্রায় ৩১ শতাংশ। দেশে বছরে ১০ লাখ সিজারিয়ান প্রসব হচ্ছে, যার ৭৯ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
ল্যাটিন আমেরিকার এক গবেষণার বরাত দিয়ে জরিপে বলা হয়, সিজারিয়ান প্রসব বৃদ্ধির ফলে মাতৃত্ব জনিত অসুস্থতা এবং মাতৃমৃত্যু বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও সিজারিয়ানের পর রক্তক্ষরণ ও অ্যানেসথেশিয়া জনিত জটিলতার কারণে স্বাভাবিক প্রসবের চেয়ে মৃত্যু হার ৩ গুণ বেশি।
চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) ও এসডিজি-এর বেইজলাইন নির্ধারণ এবং মাতৃসেবা ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য আহরণের উদ্দেশে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ (বিএমএমএস)- ২০১৬ পরিচালিত হয়। জরিপে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৪ জনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ প্যান্ড ট্রেনিং (এনআইপিওআরটি) এর মহাপরিচালক রওনক জাহান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ সার্ভিসেস ডিভিশনের সচিব মো. সিরাজুল হক খান এবং মেডিকেল অ্যাডুকেশন অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার বিভাগের সচিব ফাইজ আহমেদ।
এছাড়ও ইউএসএইড বাংলাদেশের ডিরেক্টর ক্যারল ভেসকুয়েজ, এনআইপিওআরটি এর পরিচালক (রিসার্চ) মো. রাফিউল ইসলাম সরকার উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন