নিখোঁজের ক্ষেত্রে তদন্ত করতে কতটা আগ্রহী পুলিশ?
বাংলাদেশের একটি মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত চার শ’র বেশি মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। এমন নিখোঁজ তিনজনের সন্ধান মিলেছে গত কয়েকদিনে।
প্রায় চার মাস নিখোঁজ থাকার পর হঠাৎ করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে দুই মাসেরও বেশি নিখোঁজ থাকার পর সাংবাদিক উৎপল দাসকে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, প্রায় দেড় মাস নিখোঁজ থাকার পর ফিরে এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজার। এ দুটি ঘটনায় দুইজন প্রায় একই রকম বর্ণনা দিয়েছেন।
এমন ঘটনায় নিজেরা কতটা তদন্ত করে পুলিশ?
এ ধরনের ক্ষেত্রে তদন্তে পুলিশের তরফ থেকে এক ধরনের অনীহা লক্ষ্য করা গেছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ক্ষেত্রে পুলিশের অনীহা লক্ষ্য করেছি। বিশেষ করে পরিবারগুলোর তরফ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার এক ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের এক ধরনের অনীহা বা অনাগ্রহ লক্ষ্য করি। ‘
যারা মামলা করেছেন বা অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়েছেন সেগুলো কতটা ফলোআপ করে পুলিশ?
নূর খান লিটন বলেন, ‘অনেকগুলো অভিযোগের ক্ষেত্রে দেখেছি পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন, কোনো কোনোটি এখনো অপেক্ষমাণ রয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছি এ ধরনের মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে যেমন অনীহা রয়েছে, তেমনি রয়েছে তদন্তের ক্ষেত্রেও অনীহা। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা দেওয়া কিংবা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় তথ্য নিয়ে তার বিশ্লেষণ করা-সেটা আমরা দেখি না। ‘
এই মানবাধিকারকর্মী জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে অনেক সময় তা বাদ দিয়ে জিডি (সাধারণ ডায়েরি) নথিভুক্ত করা হয় বলেও লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, ‘যেসব পরিবার আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য আসে, আমরা যখন তাদের পুলিশের কাছে নিয়ে যাই এবং পুলিশ যখন জিডি বা অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতার কথা লেখা থাকে তারা সাধারণত ওই অংশটি কেটে জিডি আকারে গ্রহণ করেন। তারপর এই জিডি বা অভিযোগকে আরো গুরুত্ব দেওয়া হয় বা ফলোআপ করা হয়-তেমনটি আমরা দৃশ্যমান দেখিনা। ‘
নিখোঁজ হওয়ার পর যারা ফিরে আসছেন তাদের কাছ থেকে তথ্য উদঘাটন করা এবং সেই বিষয়ে অনুসন্ধান চালানোর ক্ষেত্রে পুলিশের তৎপরতা দৃশ্যমান নয় বলেও তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য কি? জানতে চাইলে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করি রহস্য উদঘাটনের জন্য এবং তথ্য সবসময়ই কাম্য। তথ্যের ওপর নির্ভর করেই পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নেই। অনেক ধরনের তথ্যই তো থাকে তা যাচাই-বাছাই করে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো নিয়ে কাজ করি। ‘
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে অনেকসময় তা বাদ দিয়ে জিডি গ্রহণ করার অভিযোগ বা তদন্তের পুলিশের অনীহার অভিযোগ অস্বীকার করে এআইজি সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘নিখোঁজের ক্ষেত্রে জিডির গুরুত্ব অবশ্যই রয়েছে। এ রকম ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েই তা বিবেচনা করা হয়। ‘-বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন