চামড়া শিল্প রক্ষায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে : বাংলাদেশ ন্যাপ

গত কয়েক বছরের মত এবারও চামড়া শিল্প রক্ষায় সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকারের ভূলনীতির কারণে গত কয়েক বছরে সিন্ডিকেট চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। চামড়া শিল্পকে ধ্বংসে দায়ি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতেও সরকার ব্যার্থ বলে দাবী করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

শুক্রবার (২৩ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবী করেছেন।

তারা বলেন, বিশ্ব বাজারের চাহিদানুযায়ী চামড়ার মূল্য বৃদ্ধি পাবার কথা থাকলেও কয়েক বছর যাবত ঘটেছে সম্পূর্ণ উল্টো। গত কয়েক বছরে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্যের বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ সরকার গ্রহন করতে পারে নাই। চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেয়ে অনেককে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলতে দেখা গেছে। অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া কিনে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে না পারায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এর পেছনে কাজ করেছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। অথচ সরকার সেদিকে কোনো নজর দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও গ্রহন করছে না।

তারা বলেন, ১০ বছর আগে কোরবানির গরুর একটা চামড়ার দাম ছিল ১০০০/১৮০০ টাকা। এখন সেই চামড়ার দাম মাত্র ৫০/১০০ টাকা। অন্যদিকে চামড়াজাত সকল পন্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। জনমনে প্রশ্ন আসলে হচ্ছেটা কি? চামড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মাফিয়াদের দখলদারিত্বের কাছে কি সরকার অসহায় ? এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প ধ্বংস হবে এবং বিদেশী কোম্পানির পোয়াবারো।

নেতৃদ্বয় বলেন, চামড়া শিল্প দেশের অর্থনীতির সাফল্যগাথায় স্বীকৃত হতো একসময়। সেই স্বীকৃতির বড় কারণ ছিল কোরবানির পশু হতে প্রাপ্ত চামড়া। মূলত পাট এবং চামড়া শিল্পের ওপর ভিত্তি করেই আমাদের শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির গোড়াপত্তন। পাটের কথা আজ ইতিহাস। পাটকলগুলোর যন্ত্রপাতি যখন লুট হয়ে গেলো, চালু করা গেল না বন্ধ পাটকলগুলো। এখন তো পাট শিল্প সমাহিত। কোরবানির পশুর চামড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ মাদ্রাসায় দান করেন বা মাদ্রাসায় বেঁচে দেন। আর এই দান বা বেঁচে দেয়ার কারণ হলো মাদ্রাসাগুলোর এতিমখানা। যে এতিমদের দেখার কেউ নেই, মাদ্রাসার এতিমখানাই তাদের ভরসা।

তারা আরো বলেন, এ বছরও চামড়ার ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে বিক্রেতারা, কোথাও কোথাও নামমাত্র মূল্যে বিক্রি হয়েছে। এ চামড়ার টাকার সম্পূর্ণ হক দেশের গরিব মানুষ। করোনায় বিপর্যন্ত দেশের নিম্নবিত্ত মানুষের কোনো দায়িত্ব নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তার ওপর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোরবানির পশুর চামড়া থেকেও গরিব মানুষের হক নষ্ট করা হয়েছে।