সাতক্ষীরার কলারোয়ায় নবজাতক পেয়েছে মা, পিতা হচ্ছে না কেউ!
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সম্প্রতি ভুমিষ্ট হওয়া নবজাতক পেয়েছে তার মা, কিন্তু তার পিতা হচ্ছে না কেউ!
এমনই ঘটনা ঘটেছে উপজেলা দেয়াড়া ইউনিয়নের দেয়াড়া মাঠপাড়া গ্রামে।
৭ দিনের ওই নবজাতক ছেলে সন্তানের পিতার পরিচয় দাবী করেছেন অসহায় মা।
প্রেম-ভালোবাসার সুযোগে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবৈধ সম্পর্কের ফলশ্রুতিতে সন্তান জন্ম নেয়ায় উল্টে গেছে প্রেম-ভালবাসা আর বিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলার খোরদো পল্লী সেবা কেন্দ্রে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্ম দেন অসহায় ওই মা। বর্তমানে মা ও নবজাতক সুস্থ্য আছেন।
বৃহষ্পতিবার (৩ মার্চ) ৭ দিন বয়সী শিশু ছেলের মা (১৯) জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে দেয়াড়া নতুন বাজার এলাকার মোস্তফা সানার ছেলে নাঈম (২২) এর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। নাঈম প্রায় সময় তাদের বাড়ীতে যাতায়াত করতো। এ নিয়ে এলাকাবাসী তাদের ঘরের মধ্যে দু’জনকে আটকেও রাখে। পরে দেয়াড়া মাঠপাড়া ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম এসে নাঈমকে ধরে মারপিট করে ছেড়ে দেন। এর পরেও নাঈম তাকে ছাড়া বাঁচবে না বলে প্রায় সময় ফোন করে তাদের বাড়ীতে ও তার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতো। প্রেমের সম্পর্ক আর বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে শারীরিক সম্পর্কও হয়। এরই মধ্যে অন্ত:সত্বা হয়ে পড়লে ও পরবর্তীতে পেটের বাচ্চা বড় হয়ে যাওয়ার কথা শুনে নাঈম যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এর আগে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য তার পিতাকে ১৬ হাজার টাকা দেয় নাঈমের পিতা মোস্তফা সানা। ওই কথা শুনে পুলিশ তার বাচ্চা নষ্ট না করতে বলে।
অভিযুক্ত নাঈমের পিতা মোস্তফা সানা বলেন, তার ছেলেকে অন্যায় ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। প্রায় ৩ মাস আগে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সাদা কাগজে সহি নিয়ে বিষয়টি মিমাংশা করে নিয়েছি। এখন আবার কি সমস্যা?
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আকলিমা খাতুন গরীব অসহায় নারীকে আইনে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
খোরদো পল্লী সেবা কেন্দ্রের ডাক্তার বকুল হোসেন জানান, তার ক্লিনিকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ভর্তি হয় ওই নারী। বিকাল ৪ টার দিকে সিজার করা হয়। তিনি ৭ হাজার টাকা নিয়ে ওই সিজার করান সাতক্ষীরার ডাক্তার ইমরান হোসেনকে দিয়ে।
দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান মফে জানান, ঘটনাটি শুনে তিনি ১ মার্চ রাত ৯টার দিকে কলারোয়া থানার ওসি নাসির উদ্দীন মৃধাকে জানিয়েছেন। তিনি নিষ্পাপ শিশু ছেলের পিতার পরিচয় পায় তার জন্য পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সকল কথা শুনে ওসি সাহেব চেয়ারম্যানকে জানায়- অভিযোগ পেলে ওই নারীকে আইনে সহযোগিতা দেয়া হবে।
দেয়াড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল মান্নান জানান, ‘ঘটনাটি শুনেছি। আমরা ন্যায় বিচার চাই। নবজাতক শিশুর পিতৃপরিচয় সুনিশ্চিত হওয়া জরুরী।’
এ দিকে অহসায় ওই নারী তার নিষ্পাপ শিশু ছেলের পিতার পরিচয়ের দাবী জানিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন