মুসাকে ওমান থেকে অবশেষে গ্রেফতার করলো বাংলাদেশি পুলিশ
মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন সুমন শিকদার ওরফে আবু সালেহ শিকদার ওরফে মুসাকে ওমান থেকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এই প্রথমবারের মতো বিদেশে স্কট পাঠিয়ে আসামি গ্রেফতার করলো বাংলাদেশ পুলিশ। এক্ষেত্রে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি ওমান এনসিবি’র সহায়তা নেয়। মুসাসহ স্কটটি সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিমানবন্দরে নেমেছে।
এদিকে, মুসাকে ওমান থেকে বাংলাদেশে এনে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম।
এর আগে, টিপু হত্যা মিশনের সব ঠিকঠাক করে ১২ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন মুসা। আন্ডারওয়ার্ল্ডে তিনি ‘শুটার মুসা’ নামে পরিচিত। জোড়া খুনের তদন্তে তার নাম আসার পরই নড়েচড়ে বসেছিলেন গোয়েন্দারা।
এরপর দেখা যায় কিলিং অপারেশনের ১২ দিন আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে তিনি পালান। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশ থেকে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। মুসা প্রথমে দুবাই গেলেও পরে সেখান থেকে ওমান পালিয়ে যান। এরপর এনসিবি, ঢাকা ১০ মে এনসিবি, মাসকাটকে গ্রেফতারের অনুরোধ করে।
পরে মুসাকে গ্রেফতারের বিষয়টি এনসিবি, মাসকাট ১৭ মে ঢাকা এনসিবিকে অবহিত করে। সবশেষ ৩০ মে পুলিশ সদর দফতর বিধি মোতাবেক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান, এডিসি রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদর দফতরের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দীনের সমন্বয়ে একটি টিমকে ওমান যাওয়ার সম্মতি প্রদান করে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তখন তার গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।
জানা গেছে, সুমন শিকদার হিসেবে পাসপোর্ট নিয়েছেন মুসা। সেখানে বাবার নাম আবু সাঈদ শিকদার। মা জরিনা আক্তার। স্ত্রী নাসিমা আক্তার। গ্রাম কইখাইন, পরাইখারা, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। ইমিগ্রেশনের তথ্য বলছে, ভ্রমণ ভিসায় বৈধ পথেই দেশ ছেড়েছেন মুসা। একসময় মুসা মিরপুরকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী থাকলেও ধীরে ধীরে ঢাকায় নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামে কেবল পল্লবী ও মতিঝিল থানায় ১১টি হত্যা, অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কেবল পল্লবী থানায়ই ১০টি মামলা। সবশেষ শাহজাহানপুরে দায়ের করা টিপু হত্যা মামলার এজাহারে মুসার নাম না থাকলেও তদন্তে উঠে এসেছে তার জড়িত থাকার তথ্য। টিপু হত্যার প্রধান শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ এরই মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে মুসার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী বিকাশ-প্রকাশের আস্থাভাজন হিসেবে আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার ‘সুখ্যাতি’ রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন