বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

সেটা কমিশন আকারেই হোক অথবা ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী হোক। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত সবার স্বরূপ উন্মোচন করা না হলে নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের কাঠগড়ায় অপরাধী হয়ে থাকতে হবে। ইতিহাসের এ অধ্যায় বিস্মৃত হয়ে জোড়াতালি দিয়ে চললে রাজনীতি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

শনিবার (২৭ আগস্ট) সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের সকল শহিদ স্মরণে পিরোজপুর জেলা সমিতি, ঢাকা আয়োজিত আলোচন সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার খন্ডিত বিচার হয়েছে উল্লেখ করে শ ম রেজাউল করিম এ সময়ি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িতদের নাম মামলার চার্জশিটে আসেনি। বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ব্যর্থ ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যার সুবিধাভোগীদেরও বিচার করা হয়নি। ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের প্রেক্ষাপটে যারা সঠিক দায়িত্ব পালন করেনি তারা এখনো মুখোশ পরে বিচরণ করছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ ধ্বংস করা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পরিকল্পনার অন্যতম কারণ ছিল একাত্তর সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়া। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার অন্যতম কারণ ছিল বাংলাদেশকে একটি বিপন্ন জনপদ হিসেবে রাখা যাতে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল একাত্তরের পরাজিতদের ক্ষমতায় নিয়ে আসা।

বঙ্গবন্ধু হত্যার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র তুলে ধরে মন্ত্রী এ সময় জানান, জিয়াউর রহমান ‘গো অ্যাহেড’ বলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে হত্যার সব কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বে বিদেশি মিশনে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের চাকরি দেয়া হয়েছিল, খুনিদের সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এরশাদ খুনিদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। খালেদা জিয়া তাদের সংসদে নিয়ে এসেছে। এভাবে জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের লালন করেছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জীবনের এক বিস্ময়কর অধ্যায়। ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু পরিণত হয়েছিলেন একটি আদর্শে, একটি বিশ্বাসে, একটি দর্শনে। বাঙালি জাতিসহ বিশ্বের নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ও নিপীড়িত মানুষের পথ চলার পাথেয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন। সে কারণে বঙ্গবন্ধুর শারীরিক প্রস্থান মানে সবকিছু শেষ নয়। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কর্মময় জীবন এখন আমাদের পথ চলার পাথেয়।

পিরোজপুর জেলা সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শামসুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি এবং রুস্তম আলী ফরাজী এমপি।

পরে মন্ত্রী জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভার্চুয়ালি যোগদান করে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।