বিশ্বে আরও ভয়াবহ অবস্থা হবে, সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বের বর্তমান সংকট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ অবস্থা হবে বলে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আরও ভয়াবহ অবস্থা হবে। কোনো পয়সা দিয়েও খাবার কেনা যাবে না। সেক্ষেত্রে নিজেদের খাদ্য নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে।

বুধবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকে নিজের গ্রামের বাড়ি এবং যে যেখানে বসবাস করে এবং হোস্টেল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমিতে ব্যাপক হারে গাছ লাগাতে ও ফসল উৎপাদন করতে হবে। কারণ বিশ্বে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ অবস্থা হবে। কোনো পয়সা দিয়েও খাবার কেনা যাবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের খাবার নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। আমাদের ছাত্রলীগ যেমন ধান কাটায় সাহায্য করেছে, দরকার হলে তা রোপণেও সাহায্য করবে। জমিতে কোনো একটা ফলের গাছও লাগাতে হবে। কাজেই এভাবে সবাইকে চলতে হবে। আমরা নিজেরা যদি করতে পারি, তাহলে আমাদের- যেটা জাতির পিতা বলেছেন আমার মাটি আছে মানুষ আছে, কাজেই সেটা আমরা করতে পারবো। সে বিশ্বাস আমার আছে।

ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি ছাত্রলীগ সম্পর্কে অনেক কথা লেখা হয়৷ এত বড় একটা সংগঠন তার মধ্যে কিছু কিছু তো, আমরা ক্ষমতায় আছি বলে অনেকেই নিজেরা ঢুকে যায়। ঢুকে নিজেরাই গোলমাল করে। বদনামটা ছাত্রলীগের ওপর পড়ে। ছাত্রলীগকে সংগঠন করার সময় গ্রুপ করানোর জন্য এ রকম আলতু-ফালতু লোক দলে ঢোকাবে না। তাতে নিজেদের বদনাম, দলের বদনাম, দেশের বদনাম। পেছনে তো আমাদের লোক লেগেই আছে, লেগেই থাকে৷ ছাত্রদল যতো অপকর্ম করে গেছে সেটা নিয়ে কথা নেই, কিন্তু ছাত্রলীগের একটু হলেই বড় দোষ। কিন্তু এটা নিজেরাই ঠিক থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক ঘাত প্রতিঘাতের পর আমরা ক্ষমতায় এসেছি। বাংলাদেশের এত উন্নতি আমরা করতে পেরেছি, একটা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে উন্নীত করতে পেরেছি যেটা জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি আমি। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ যেমন হবে, ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান সেটাও প্রমাণ করে দিয়েছি। কাজে যারা আগামীতে আসবে সেটা অনুসরণ করলে এই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারবে। করোনার ধাক্কা তারপর ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ। আমি ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানাই যখন ধান কাটার লোক পাওয়া যাচ্ছিল না, ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা নেমে গেছে, ধান কেটেছে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিয়েছে। আমি এটাই বলব ছাত্রলীগকে এভাবে মানবতার সেবা করে যেতে হবে। পাশাপাশি যেটা সব থেকে বেশি দরকার লেখাপড়া। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, আধুনিক প্রযুক্তির জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি চাই। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে তার উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমাদের আজকের প্রজন্ম বা প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেকে প্রস্তুত করবে। এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষায় দীক্ষায় উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সেভাবে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে কারণ দেশ চালাতে গেলে শিক্ষার প্রয়োজন আছে। জ্ঞানের প্রয়োজন আছে, ইতিহাস জানার প্রয়োজন আছে। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে এই দেশের ভবিষ্যৎ আমরা কি করব। সে চিন্তা ভাবনা থাকতে হবে। আর সেইটা না থাকলে দেশের কোনোদিনই কোন উন্নতি হবে না। সেদিকে লক্ষ্য রেখে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে।

ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ডাকসু সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।