বাগেরহাটে পাওনাদারের ভয়ে বাবার মৃতদেহ ফেলে পুত্রের পলায়ন! প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাফন
পাওনাদার ৬ লক্ষ টাকা চাওয়ায় সেই টাকার ভয়ে পুত্র সন্তানেরা বাবার মৃতদেহ ফেলে জানাযা স্থান ত্যাগ করেন। পরে ৫ ঘন্টা পর জানাযা পড়ানো হয় উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক শিক্ষক মাষ্টার আজিজুর রহমানের।
ঘটনাটি ঘটেছে (১২ জুলাই) উপজেলা সদর রায়েন্দা ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে।
পরিবার ও পাওনাদার সূত্রে জানাযায় শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও তাফালবাড়ী সঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজিজুর রহমান মৃধা স্বাধীনতা পরবর্তী সময় শিক্ষকতা শুরু করেন। গত ২০ বছর পূর্বে প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানদের ফেলে রায়েন্দা বাজারস্থ পাঁচরাস্তা এলাকায় নতুন বাড়ী করে ২য় স্ত্রী নিয়ে বসবাস শুরু করে এবং প্রথম স্ত্রী পরিবারের খোঁজ খবর রাখা বন্ধ করে দেয়।
প্রথম স্ত্রীর ঘরে তার ২ পুত্র ও ৩ কন্যা রয়েছে। ২ য় স্ত্রীর সংসারে ২ পুত্র ও ১ কন্যা নিয়ে তার সংসার জীবন। তার সম্পত্তির বেশিরভাগ অংশ বিক্রি করে প্রায় কোটি টাকার মতো ২ য় স্ত্রীর একাউন্টে জমা দেয় বি ত হয় প্রথম ঘরের স্ত্রী ও সন্তানেরা। গত দুই বছর পূর্বে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে মাষ্টার আজিজুর রহমান। ধীরে ধীরে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটে।
গত (১১ জুলাই) বিকাল ৪ টায় রায়েন্দা বাজারস্থ পাঁচরাস্তা এলার বাসায় মৃত্যু বরণ করেন আজিজুর রহমান। মৃত্যুর পর বড় স্ত্রী সন্তানেরা তাদের বাড়িতে বাবার মৃত দেহ দাফন করার দাবি করলে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানেরা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেয়। পরে (১২ জুলাই) সকাল ১০ টায় জানাযার সময় নির্ধারণ করে এবং জানাযা শুরু করবে ঠিক সেই মুহুত্রে উপজেলার চাল রায়েন্দা গ্রামের অপু ১ লক্ষ ৫০ হাজার সহ রায়েন্দা বাজারের ৫/৬ জন ব্যবসায়ীরা প্রায় ৬ লক্ষ টাকা পাওনা দাবি করে এবং পাওনা টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত জানাযা পড়ানো যাবেনা বলে তারা অভিযোগ করেন।
এঘটনা শোনার পরে তার পুত্র সন্তানেরা বাবার মরদেহ জানাযা মাঠে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নূর-ই আলম সিদ্দিকীকে অবহিত করলে তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রথমিক শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষক সমিতির নেত্রীবৃন্ধ সহ সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের দ্বায়ীত্ব প্রদান করেন। ঘটনা ৫ ঘন্টা পর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানদের সাথে কথা বলে তারা কিছু টাকা দেয়ার সম্মতি দেওয়ায় ও বাকি টাকা ভাইস চেয়ারম্যান আদায় করে দিবেন এই আশ্বাসে পাওনাদাররা জানাযা পড়ার অনুমতি দেয়।
জোহর নামাজ বাদ দুপুর ২ টায় তার জানাযা সম্পন্ন হয়। পরে তাকে প্রথম পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এব্যপারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে ও সকলের সহযোগীতায় তিনি এ কাজটি সমাধান করতে পেরেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন