চাহিদা মতো বৃষ্টি হওয়াতে সিলেটে চা বাগানগুলো আশা আলো জাগাচ্ছে
চলতি বছরে মাত্রারিক্ত তাপমাত্রায় গরম ও খরা থাকার কারনে সিলেটের চা বাগান গুলোতে চা পাতা হলদে ও মরা গাছে পরিণত হয়েছিল। অতিরিক্ত খরার কারণে চার উৎপাদন কমে গিয়ে ছিলো। এতে বাগান মালিকরা হতাশায় ভূগছিলেন। তবে মালিক পক্ষের বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ কোটি কেজিরও বেশি ছিলো। কিন্তু ভরা মৌসুমে চায়ের উৎপাদন ছিল না। তীব্র খরায় বিগত বছরের চেয়েও উৎপাদন কমে এসেছিল অস্বাভাবিক হারে। তবে বর্ষা মৌসুমের শেষার্ধের ভারি বৃষ্টিপাত আশা জাগাচ্ছে চা বাগান মালিকদের। পরিমিত ও নিয়মিত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দেশে চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম শুরু হয় জুনে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে প্রাকৃতিক সেচ ব্যবস্থায় অধিক পরিমাণে গুণগত মানের চা উৎপাদন হয়। তবে এবার জুন পেরিয়ে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে চা উৎপাদন ছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র খরায় বাগান গুলোর উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়। তবে সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের ফলে উৎপাদনে বড়তে দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে টানা পাঁচটি সাপ্তাহিক নিলামে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি চা সরবরাহ করেছে বাগানগুলো।
বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ার প্রভাব পড়ে ১৯ জুন অনুষ্ঠিত নবম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক নিলামে। এরপর প্রায় এক মাস অর্থাৎ টানা ১২তম নিলাম পর্যন্ত আগের বছওেংষধস চেয়ে কম চা পাঠিয়েছে বাগান গুলো। তবে ১৩তম আন্তর্জাতিক নিলামে অবস্থার পরিবর্তন হয়। ১৩তম নিলাম থেকে সর্বশেষ ১৬তম নিলাম পর্যন্ত টানা পাঁচটি নিলামে বাড়তি চা পাঠিয়েছে বাগান গুলো। দুই সপ্তাহ ধরে নিয়মিত ও পরিমিত বৃষ্টিপাত থাকায় আগামীতেও বাড়তি উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চা নিলামকারী ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান গুলো জানিয়েছে, সর্বশেষ পাঁচটি নিলামে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪০৪ কেজি চা বিক্রির জন্য তোলা হয়েছিল, যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ লাখ ৫ হাজার ২৭৬ কেজি বেশি। যদিও ইবমঁস থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত চারটি নিলামে উৎপাদন হয় ১ কোটি ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭৯ কেজি। আগের বছরের একই সময়ে চারটি নিলামে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩২০ কেজি। অর্থাৎ বর্ষা মৌসুম শুরুর চার নিলামে আগের বছরের চেয়ে ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪১ কেজি চা কম উৎপাদন হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার চায়ের ফলন কমলেও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। বিগত বছর গুলোয় প্রতি কেজি চায়ের দাম ২০০ টাকার কম থাকলেও এবার দীর্ঘ সময় ধরে ২০০ টাকার ওপওে লেনদেন হয়েছে। ১৩তম নিলামে মৌসুমের সর্বোচ্চ দাম অর্থাৎ কেজি প্রতি ২২৩ টাকা ৪১ পয়সা গড় দামে চা কিনেছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশে বর্তমানে চায়ের বার্ষিক চাহিদা প্রায় সাড়ে নয় কোটি কেজি। ২০২২ সালে ১০ কোটি কেজি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি। চলতি বছর লক্ষ্য মাত্রা ১০ কোটি ২০ লাখ কেজিতে উন্নীত হলেও জুন পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার কেজি। সাম্প্রতিক উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকলে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব বলে মনে করছে চা বোর্ড ও বাগান মালিকরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন