ফিতনা ফ্যাসাদ থেকে বাঁচার উপায়
ফিতনা, ফ্যাসাদ দুটিই আরবি শব্দ। ফিতনা ও ফ্যাসাদের অর্থ হলো নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, যড়যন্ত্র, চক্রান্ত, বিপর্যয়, পরীক্ষা ইত্যাদি। পৃথিবীতে এ ফিতনা, ফ্যাসাদ মানুষই সৃষ্টি করে। যারা এ পৃথিবীতে ফিতনা, ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তারা খুবই জঘন্য চরিত্রের অধিকারী।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন এ ধরনের লোকদের ব্যাপারে আল কোরআনে বলেন, ‘তুমি পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইবে না, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আল কাসাস, আয়াত ৭৭)। সুতরাং দুনিয়ার বুকে যারা ফিতনা, ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তারা যে আল্লাহর কাছে কত অপছন্দনীয় তা বলাই বাহুল্য। আল্লাহ আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তাতে তোমরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কোরো না।’ (সুরা আল আরাফ, আয়াত ৫৬)।
পৃথিবীতে মানুষ নানা রকম অপরাধ ও অপকর্মের মাধ্যমে সমাজে ফিতনা, ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। সমাজে তৈরি করে অরাজকতা। বৈরী পরিবেশ। যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও গর্হিত। আল্লাহ আরও বলেন, ‘ফিতনা হত্যার চেয়েও জঘন্য’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৯১)। যে সমাজে ফিতনা, ফ্যাসাদের প্রসার লাভ করে সে সমাজ কখনো উন্নতি করতে পারে না। ফিতনাকারীরা সমাজে অনৈক্যের সৃষ্টি করে অনৈতিক কার্যকলাপের বিস্তৃতি ঘটায় এবং সমাজ কলুষিত করে। এতে মানুষের সংহতি বিনষ্ট হয়।
মানুষ সমাজে নিজধর্ম পালন করতে পারে না। সম্পদ ও সম্ভ্রমের নিরাপত্তা থাকে না। সর্বস্তরে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা ও নীতি-নৈতিকতার অভাব। মানুষ সুচারুভাবে তার সামাজিক আচার -অনুষ্ঠান পালন করতে পারে না। ফিতনা ফ্যাসাদ সমাজে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ভয়ভীতি ও পেশিশক্তির উদ্ভব ঘটায়। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। কেউ নিয়ম মেনে চলতে চায় না। সমাজে-রাষ্ট্রে সবখানে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। শান্তি, উন্নতি ও প্রগতির পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। বস্তুত ফিতনা, ফ্যাসাদ সমাজে মারাত্মক অপরাধ ও দুষ্ট ব্যাধি। আমরা এখন ফিতনার যুগেই প্রবেশ করেছি।
আমাদের চারপাশজুড়ে এখন শুধুই ফিতনা। আমরা সবাই এখন পাপের সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছি। আমাদের সমাজে এখন অনিয়মই নিয়ম। কবিরা গুনাহের মাধ্যমে আমরা প্রগতিশীল হচ্ছি। সুদ, ঘুষ, চুরি, দুর্নীতি, ডাকাতি, গিবত, অন্যের হক নষ্ট করা নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এখন আর গুনাহকে গুনাহ বলতে রাজি নই। এ যেন সব স্বাভাবিক ব্যাপার। এসব থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায় কোরআন ও হাদিস অনুসরণ করা।
আমাদের সবার উচিত নিজেকে সংশোধন করা। সর্বদা আল্লাহর দরবারে তওবা ইস্তিগফার করা। তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া। ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা। ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য রসুল (সা.) একটি দোয়া বেশি বেশি পাঠ করার তাগিদ দিয়েছেন। ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল ফিতানি, মা জহারা মিনহা ওয়া মা বাতানা। অর্থ, হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব ধরনের ফিতনা থেকে পরিত্রাণ চাই। (মুসনাদে আহমদ, ২৭৭৮)।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন