হাসিনার দোসর আমলা, গোবিন্দবর সহ চিহ্নিত সকল দালালদের বিচারের দাবিতে সমাবেশ, স্মারকলিপি পেশ

গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর আমলা, গোবিন্দবর সহ চিহ্নিত সকল দালালদের বিচারের দাবিতে (১৪ অক্টোবর) সোমবার দুপুর ১২ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছে বিপ্লবী ছাত্র—জনতা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব বরাবরে দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আবু তৈয়ব হাবিলদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা তারেক রহমান, গণনেতা হাবিবুর রহমান রিজু, শহীদ রাব্বীর দুই বোন মিতু ও মীম, ছাত্রনেতা আনন্দ আহমেদ, ছাত্রনেতা ইয়াছিন আরাফাত, শ্রমিক নেতা মাহবুবুল হক শিপন প্রমুখ।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা তারেক রহমান বলেন, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি ভারত ও আওয়ামী দোসরদের সাথে উপদেষ্টাদের দহরম—মহরম সম্পর্ক ও আঁতাতের জন্য নয়। অবিলম্বে সচিবালয়সহ সর্বক্ষেত্রে আওয়ামী দালালদের অপসারণ, গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানায়।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আবু তৈয়ব হাবিলদার বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ আমলারা এখন সরকার চালাচ্ছে। ‘র’ এর এজেন্ট, শেখ হাসিনার দোসর এডিবি’র কর্মকর্তা গোবিন্দবর তথ্য উপদেষ্টার সাথে মিটিং করে, এসব কিসের লক্ষণ? জনগণ জানতে চায়। তিনি গোবিন্দবরকে গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

স্মারকলিপিতে বিপ্লবী ছাত্র—জনতার পক্ষ থেকে বলা হয়, স¤প্রতি গণমাধ্যমের সংবাদচিত্রের মারফত ইতিহাসের নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ইনার সার্কেলের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী, বেনজির—বনোজ—হারুন—মনিরুলের—ছাত্র—জনতা হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা গোবিন্দ বরকে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সভায় উপস্থিতি দেখে দেশের জনগন আহত হয়েছে; যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার পরিপন্থী ও আন্দোলনে শহীদদের অবমাননার শামিল।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে গোবিন্দ বরের কৃতঅপকর্মের খবর প্রকাশিত হয়েছে। গোপালগঞ্জ—মাদারীপুর সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী সদস্য হিসাবে রাস্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার অপরাধ শেখ হাসিনার কোন মন্ত্রীর চেয়ে কম নয়, বরং ক্ষেত্র বিশেষে অনেক বেশি। সরকারী প্রভাব খাটিয়ে বিশেষ করে পুলিশ বাহিনী ব্যাবহার করে ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতির নির্বাচন, পুলিশ বাহিনীতে ছাত্রলীগের নিয়োগ, দুর্নীতি দমন কমিশনকে আওয়ামীকরণ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ঘুষ বাণিজ্যসহ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে খুনি হাসিনার দূর্নীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল।

প্রভাব খাটিয়ে নারী নির্যাতনের মত ঘটনার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে গোপালগঞ্জের সিন্ডিকেটসদস্য গোবিন্দ বর আওয়ামী মন্ত্রীদের বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য ধামাচাপা দিতে সক্রিয় ছিল। গুম—খুন—বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের খবর যেন আন্তর্জাতিক মহলে প্রকাশিত না হয় সেখানেও এই ব্যক্তি সর্বোচ্চ সচেষ্ট ছিল।

দেশে হাসিনার পদলোহী একদল দালাল সাংবাদিক ও গনমাধ্যম তৈরী করার অন্যতম কারিগর গোবিন্দ বর সরাসরি অর্থ যোগানে সক্রিয় ছিল। এমন কি সাগর—রুনি হত্যাকান্ড ধামাচাপা দেয়া ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশী শক্তির ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার মত গুরুতর অভিযোগের তীর গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে রয়েছে।

তার মত হোয়াইট কালার ক্রিমিন্যাল কি করে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সরকারের সংস্কার কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে? গণহত্যার বিস্তারিত তদন্ত করলে গণহত্যাকারী সরকারকে টিকিয়ে রাখা ও গণহত্যার ষড়যন্ত্রের সাথে তার জড়িত থাকার অপতৎপরতার প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

কাজেই রক্তাক্ত গণ—অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই সরকারের কর্মকান্ডের সাথে গোবিন্দ বরের মত হোয়াইট কালার ক্রিমিন্যালের সম্পর্ককে আমরা নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গণহত্যাকারী সরকারের সময় তার অপকর্মের তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে এসে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবী জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনার দুষ্ট চক্রের সদস্য শুধুমাত্র গুটিকয়েক মন্ত্রী—আমলা—পুলিশ অফিসারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং গোবিন্দ বরের মত ছদ্মবেশীদের পরিসর অনেক বিস্তৃত। এই ছদ্মবেশীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের অধীনে আনার জোর দাবী জানাচ্ছি।