বিএনপির ইফতার মাহফিলে আ.লীগ নেতা! সাতক্ষীরার সমালোচনার ঝড়

সাতক্ষীরার শ্যমানগরে বিএনপি’র ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের নেতার উপস্থিতি, বিএনপির তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চায় সৃষ্টি হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মঞ্চে আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান সাদেম এর উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

গত ১৪ মার্চ ইশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এ ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ইব্রাহিম খলিল।

প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান মনির।

বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান কবীর, সাবেক সহ. সভাপতি জিএম লিয়াকত হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আলমগীর, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শেখ লিয়াকত আলী বাবু, উপজেলা যুবদল আহবায়ক শফিকুল ইসলাম দুলু, উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক গাজী নুরুজ্জামান, প্রভাষক আব্দুল ওয়াহাব প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে ২০২০ সালের বিএনপির ক্রান্তিকালে শ‍্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক থাকাবস্থায় সাবেক এমপি শেখ হেলালের নির্দেশনায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা-৪ আসনের আওয়ামীলীগের এমপি জগলুল হায়দারের হাতে ফুলের দিয়ে আওয়ামীলীগে যোগ দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান সাদেম।
এ সময় তার যোগদানের খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

এছাড়া একটি সমাবেশে সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান সাদেম শেখ হাসিনার প্রতি আস্হা রেখে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন বলে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে আবারও বিএনপিতে ঢোকার চেষ্টা করেন সাদেকুর রহমান।

কিন্তু বিএনপির ইফতার মাহফিলে সাতক্ষীরা জেলার একজন যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান এর সাথে সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান এর ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপির নির্দেশনা উপেক্ষা করে মঞ্চের সামনে প্রথম সারিতে আওয়ামী লীগের এ নেতার উপস্থিতি নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

উল্লেখ্য যে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান ইতিপূর্বে শ্যামনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে বৈঠকের সময় মঞ্চে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের দুজন সহসভাপতি দেবীরন্জন মন্ডল ও ডাঃ মুজিবর রহমানের উপস্হিতি নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছেন জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে আসা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান কি আওয়ামীলীগ পূনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছেন?

এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন বিগত ১৭ বছর আমরা হামলা মামলায় জর্জরিত হয়ে এলাকায় থাকতে পারেনি অথচ বিএনপির দূঃসময়ে আওয়ামিলীগে যোগ দেয়া সাদেক চেয়ারম্যান সুসময়ে এসে যদি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এর সাথে মঞ্চের সামনে বসেন তাহলে আমাদের রাজনীতি করে আর কি হবে?

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এডঃ আশেক এলাহী মুন্না হতাশা ব্যক্ত করে বলেন দলের ক্রান্তিলগ্নে আমরা অসংখ্যবার কারাবরণ করেছি, বিএনপির একটি প্রোগ্রামে উপজেল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা করা হয় এবং সে হামলায় আমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসি এবং সে হামলায় আহত হন শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মাষ্টার আব্দুল ওয়াহেদ, বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মরহুম জহুরুল ইসলাম অথচ দূঃসময়ে বিএনপি থেকে আওয়ামিলীগে যোগদানকারী সাদেম চেয়রাম্যান কিভাবে জেলা বিএনপি নেতার সাথে একই মঞ্চে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডঃ মাসুদুল আলম দোহা এ বিষয়টি নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও বিএনপির হাইকমান্ড এ ব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ড. মনিরুজ্জামান এর সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।