আমাদের সব সমস্যার জন্য দায়ী ভারত : জাফরুল্লাহ

‘বাংলাদেশের সব সমস্যার জন্য দায়ী হচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত’- এমন দাবি করে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘এই সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। এটি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে বিএনপিকে মাশুল দিতে হবে। ভারতকে চিনতে ব্যর্থ হলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ’

শুক্রবার বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জন দল (বিজেডি) আয়োজিত ‘মহান স্বাধীনতার ৪৭ বছর ও জনগণের প্রত্যাশা’-শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ বিএনপিকে সম্মিলিত বিরোধী দল গঠনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকুক বা মুক্ত হোক, বিএনপিকে সম্মিলিত বিরোধী দল গঠনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিএনপিকে বড় দলের অহংকার ভুলে সব গণতান্ত্রিক শক্তির সমন্বয়ে সম্মিলিত বিরোধী দল গঠন করতে হবে। বিনা চ্যালেঞ্জে সরকারকে ছেড়ে দেয়া যাবে না। তাদের বুঝতে হবে বেগম জিয়াকে জেলে রেখেই সরকার আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। আর সে জন্যই তারা নতুন নতুন কর্মপদ্ধতি প্রয়োগ করছে।’

বিএনপিপন্থি এই বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘সরকারের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে না পারলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ যেমন খারাপ, তেমনই বিএনপি ও দেশের ভবিষ্যতও সুখকর হবে না।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বেগম জিয়াকে জেলে রাখতেই সরকার একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। তারা নিম্ন আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করছে, এটি দেশবাসী বুঝে। সরকারকে মনে রাখতে হবে ‘দেশের জনগণ কাউয়া নয়’। দেশের জনগণ সরকারের নাটক ভালো করেই উপলব্ধি করছে। ’

‘স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও ক্রমাগত সমস্যা বাড়ছে। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে। গণতন্ত্র বার বার হোঁচট খাচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলেই সবাই লাভবান হবে বা দেশ ও দেশের মানুষ মুক্তি পাবে বিষয়টি এমন নয়। দেশ ও জনগণের মুক্তির জন্য বিএনপি চিন্তা-চেতনার মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বর্তমান সরকার ভণ্ড ও প্রতারক, তারা ভোট ডাকাত। ভোটকেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও তারা ৪০% ভোট পায়, যা হাস্যকর। তাদের কথায় জনগণ বিশ্বাস করে না। তাদেরকে সম্মিলিতভাবে ‘না’ বলতে হবে।’

তিনি বিএনপি ও ২০ দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে, রাষ্ট্রের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনাদের কর্মসূচি কী জাতি তা জানতে চায়। আগামীতে দেশ জাতির সামনে আপনাদের বক্তব্য কী তা স্পষ্ট করতে হবে। আপনাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হলেই কেবল জাতীয় ঐক্য সম্ভব। শুধু মুখে মুখে জাতীয় ঐক্যের কথা বললে হবে না।’

মান্না বলেন, ‘৪৭ বছরে গুম, হত্যা-নির্যাতন বেড়েছে কয়েকশ গুণ। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস কমে যাচ্ছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। এগুলোর পরিবর্তন করতে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, প্রতিষ্ঠিত করতে হবে জনগণের সরকার।’

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছরে গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শাসক গোষ্ঠীর ক্ষমতায় টিকে থাকার লোভের কারণে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্র বারবার হুমকির মুখে পড়ছে। ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছে জাতি। এই অবস্থায় সব দেশপ্রেমিক-গণতান্ত্রিক শক্তির জাতীয় ঐক্য মঞ্চ প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।’

জনদলের চেয়ারম্যান ডা. এস.এম শাজাহানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী’র সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, লেবার পার্টি মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী প্রমুখ।